আমদানি করা আপেল, কমলা, আঙুর, নাশপাতি, আনারসসহ তাজা ফলের ওপর আরোপিত শুল্ক–কর কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফলে করভার কমানোর সুপারিশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে কমিশন, যার একটি কপি জাগো নিউজের হাতে এসেছে।
Advertisement
চিঠিতে সংস্থাটি বলছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও শুল্ক–কর বাড়ানোর কারণে আমদানি করা তাজা ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা ভোক্তার ওপর অসহনীয় চাপ সৃষ্টি করেছে।
সম্প্রতি তাজা ফল আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করে এনবিআর। এখন তা আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করেছে ট্যারিফ কমিশন। এ ছাড়া তাজা ফল আমদানিতে অগ্রিম কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ এবং ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক যৌক্তিক করারও সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ফল মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এ জন্য ট্যারিফ কমিশন এই প্রস্তাব করেছে। আমরাও একই দাবি নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে বসবো।
Advertisement
চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন জানায়, ডলারের দাম ও করভার বৃদ্ধির ফলে তাজা ফল আমদানি কমে গেছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় আপেল আমদানি ৫১ শতাংশ, মাল্টা ৭০ শতাংশ, আঙুর ২৯ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় গত জানুয়ারিতে মেন্ডারিন ৫১ শতাংশ, আঙুর ২১ শতাংশ, আপেল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, নাশপাতি ৪৫ শতাংশ, আনার ও ড্রাগন ৩২ শতাংশ আমদানি কমেছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়। বর্তমানে ৮৬ টাকা মূল্যের ফল আমদানি করা হলে তার জন্য ১২০ টাকা কর দিতে হয়।
কমিশন জানায়, উচ্চ শুল্ককরের ফলে তাজা ফলের আমদানি হ্রাসের ধারা অব্যাহত থাকলে কেবল ভোক্তা সাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে না, বরং ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাজা ফল আমদানির পরবর্তী পর্যায়ে তেমন কোন প্রক্রিয়াজাত (মূল্য সংযোজন) করা হয় না; তাই অগ্রিম কর (স্থানীয় পর্যায়ের অগ্রিম ভ্যাট ৫ শতাংশ) আরোপ করা সমীচীন নয়। এর ফলে ব্যবসায়ীদের রিফান্ড নেওয়ার জন্য আবেদন করতে হয় এবং তাতে অনুমোদনের নিমিত্ত সময়ক্ষেপণসহ আর্থিক চাপের সম্মুখীন হতে হয়। আমদানি পর্যায়ে খাদ্য পণ্য হিসেবে ফলের ওপর এ ধরনের অগ্রিম কর (স্থানীয় পর্যায়ের অগ্রিম ভ্যাট ৫ শতাংশ) অব্যাহতি প্রদান করা যেতে পারে।
এসএম/কেএএ/
Advertisement