‘পাবলিক অডিট বিল-২০২৪’ এর খসড়া নিয়ে গোপনীয়তার চর্চায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে অবিলম্বে খসড়া বিল উন্মুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানায় টিআইবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুধুমাত্র অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান, একটি দাতা সংস্থা এবং বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মধ্যে আবদ্ধ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পাবলিক অডিট বিল-২০২৪ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
বিষয়টিকে অনভিপ্রেত উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ প্রত্যাশিত অডিট বিলের খসড়া মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের সম্পৃক্ততার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, হিসাব নিয়ন্ত্রণ ও নিরীক্ষণ কি শুধু সরকারি ও একটি প্রভাবশালী ঋণদাতা সংস্থার বিষয়? এই বিল রাষ্ট্রের জনগণের অর্থসম্পদ ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আইনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হবে। ফলে এ বিলের বিষয়ে নাগরিক সমাজ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নেওয়ার বিষয় পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।
Advertisement
এ অবস্থায় পাবলিক অডিট বিল-২০২৪ এর খসড়া জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের জন্য অবিলম্বে উন্মুক্ত করতে আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
২০১৫ সালে ‘মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে (সিএজি) বাজেট, নিয়োগসহ সব বিষয়ে সাংবিধানিক স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করাসহ ২০ দফা সুপারিশ করেছিল টিআইবি।
এ প্রতিবেদনের উল্লেখ করে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএজিকে শক্তিশালী করার দাবি আমরা দীর্ঘদিন ধরে উত্থাপন করে আসছি। গবেষণালব্ধ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আমরা সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছিলাম। এর মধ্যে, সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মাধ্যমে আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাবিত নিরীক্ষা আইন, অর্গানোগ্রাম ও নিয়োগের বিধিমালা অনুমোদন এবং সিএজিকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবের বাইরে আনার ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রত্যাশা ছিল, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএজিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু খসড়া অডিট বিল পর্যালোচনা শুধুমাত্র সরকারি সংস্থাসমূহ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ফলে অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হওয়া অমূলক নয় যে, কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময়ের মতো এখনো সিএজিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আমলাতন্ত্রের হাতে করায়ত্ত করে রাখার পাঁয়তারা চলছে।
তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে যে, সিএজি সরকারের বা কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দেশি-বিদেশি আমলাতন্ত্রের অধীন কোনো সংস্থা নয়। এটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যার চূড়ান্ত মালিকানা জনগণের। তাই খসড়া আইনটি অবিলম্বে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আগ্রহী অংশীজনের মতামতের সুযোগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময়ের জন্য উন্মুক্ত করার আহ্বান জানাই। পরবর্তী সময়ে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ায় তা চূড়ান্ত করা হোক।
Advertisement
এসএম/কেএসআর/জেআইএম