শিক্ষা

ভর্তি পরীক্ষা: প্ল্যান-বি নিয়ে ভাবার সময় এখনই

উচ্চমাধ্যমিক পাস করে একেকজন শিক্ষার্থী নিজের পছন্দের বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কখনও আবার পুরো একটি পরিবারের স্বপ্নের ভার থাকে একজন ভর্তিপরীক্ষার্থীর তরুণ কাঁধে। তবে কঠিন বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আসনসংখ্যা মোট ভর্তিপরীক্ষার্থীর সংখ্যার সামনে যথেষ্ট নয়।

Advertisement

২০২৪ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৬৪৪ জন। এদিকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট আসনসংখ্যা ৬০ হাজারের কিছু বেশি। এই পরিস্থিতিতে খুব স্বাভাবিকভাবেই অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আসনের অভাবে তার প্রথম পছন্দের বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন না। তাই যৌক্তিক চিন্তাভাবনা করে বিকল্প পরিকল্পনা বা প্ল্যান-বি ঠিক করে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। বেশ কিছু বিশ্ব বিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে পরীক্ষা হয়ে গেছে। বাকী আছে আরো কয়েকটি বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়।

কীভাবে তৈরি করবেন প্ল্যান-বি?

যাদের পরিবারের সামর্থ্য আছে, সাধারণত তাদের প্রথম বিকল্প হয় বেসরকারি বিশ্বাবিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজগুলো। তবে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতেও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসতে হয়। যারা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পাবলিকে সুযোগ পাননি, তাদের অনেকেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বেঁছে নেন নিজের স্বপ্ন পূরণের ধাপ হিসেবে। অনেক শিক্ষার্থী আবার সরাসরিও প্রাইভেটে পড়াকেই বেশি গুরুত্ব দেন। তবে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির অধিকাংশের পক্ষেই এই বিকল্প গ্রহণযোগ্য নয়।

এবার তাহলে যেনে নিন প্ল্যান-বি তৈরির পাঁচটি প্রাথমিক ধাপ-

১. আপনার মূল প্রস্তুতির সঙ্গে অল্প সংযোজন-বিয়োজন করে প্রস্তুতি নেওয়া যায়, এমন বিষয়গুলোর তালিকা তৈরি করুন। যেমন- আপনি যদি মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষায় বসার জন্য পড়াশোনায় আপনার বিশেষ কিছু সংযোজন করার প্রয়োজন পড়বে না।

Advertisement

আরও পড়ুনপরীক্ষার আগের রাতের চেকলিস্টবিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয় নির্ধারণ করবেন কীভাবেদেখে নিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষার দিনক্ষণ

২. খুব ভিন্ন প্রকৃতির প্রস্তুতি প্রয়োজন, এমন বিষয়ে যদি আপনি আগ্রহী হন, তাহলে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি আপনার জন্য অনেকটা বেশি জটিল হয়ে যাবে। সিলেবাস দেখে যাচাই করুন, আপনি সে পরিমাণ চাপ নিতে পারবেন কিনা। যেমন- আপনি যদি ব্যবসায় শিক্ষা ও চারুকলায় আগ্রহী হন, সেক্ষেত্রে আপনাকে দুটো ভিন্ন পদ্ধতিতে প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনি কোন বিষয়ে কতোক্ষণ সময় দেবেন, সেটা নির্বাচন করে ফেলুন।

৩. রিঅ্যাডমিশনে বসার সুযোগ আছে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেসবের জন্য আরেকবার চেষ্টা করার রাস্তা তো খোলাই আছে।

৪. আপনার পছন্দের তালিকা ও একই সঙ্গে প্রস্তুতি নেওয়া যায় এমন বিষয়ের তালিকা দুটো তুলনা করলেই তৈরি হয়ে যাবে আপনার প্ল্যান-বি’র খসড়া।

৫. একপর খেয়াল করুন ক্যারিয়ারের সুযোগ, চাকরির গ্রোথ ও বেতন। আপনি নিজের জন্য যেমন জীবন তৈরি করতে চান, কী ধরেনর ক্যারিয়ার থেকে সেটা করা সম্ভব সেটা খুঁজে নিন। চাকরির সুযোগ বিবেচনায় রেখে বিষয় নির্বাচন করুন।

Advertisement

প্রথম পছন্দকে অবশ্যই বেশি গুরুত্ব দিন যেন সেখানে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা সর্বাধিক থাকে। সেই সঙ্গে আপনার বিকল্প পছন্দটিও যেন গুরুত্বের প্রশ্নে দ্বিতীয় স্থানেই থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। মনে রাখবেন, আপনার মানসিক উন্নয়ন ও মানবতার কল্যাণে ভূমিকা রাখার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা।

আরও পড়ুননিজেদের প্রস্তুত করলে কাজের অভাব নেইপ্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষার তারিখউন্নয়ন অধ্যয়নে ছাত্রাবস্থায় মেলে খণ্ডকালীন ভালো চাকরি

এএমপি/জেআইএম