বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আগামী মার্চের মধ্যে দাখিল করা সম্ভব হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তবে এটা কোনো ফাইনাল টাইমলাইন নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুটি মামলার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এমন তথ্য জানান চিফ প্রসিকিউটর।
Advertisement
এর আগে হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আরও দুই মাস সময় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বিষয়ে আগামী ২০ এপ্রিল পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত।
শেখ হাসিনার তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, রিপোর্টের বর্তমান স্ট্যাটাস যে কোন পর্যায়ে তদন্তটা আছে সেটা আদালতে বলেছি। আমরা আশা করি আগামী মাসের মধ্যে বিশেষ করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেটা সেটার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা সম্ভব হতে পারে বলে আশা করছি। এটা কোনো ফাইনাল টাইমলাইন নয়।
চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, আমাদের তদন্ত রিপোর্টের মধ্যে জাতিসংঘের রিপোর্ট ন্যাচারালি অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করছি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনের উপাদানগুলো চেয়েছি। সেগুলো সংগ্রহের একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। যতটুকু পাওয়া যাবে সেটাকে তদন্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত করবো। এটা মামলা প্রমাণের জন্য বড় এভিডেন্স হিসেবে কাজ করবে। এ জন্য দুই মাসের সময় চেয়েছিলাম। আদালত ২০ এপ্রিল পরবর্তী তারিখ রেখেছেন। এই সময়ের মধ্যে যাতে তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়। আমরা আশা করছি এর আগে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে পারবো।
Advertisement
আমরা তদন্তের একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। আশা করছি খুব দ্রুত রিপোর্টগুলো আমাদের হাতে চলে আসবে।
স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারে করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩। সে আইনে অপরাধীদের বিচারও চলে আসছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর সে আইন নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে। উল্লেখযোগ্য সংশোধনী আনা হয় আইনে। শুধু আইনেই নয়, মেরামত করে দৃষ্টি নন্দন তথা ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনকে।
গত ২৪ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ সংশোধন করে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ করা হয়েছে।
সংশোধিত আইনে বিচার হবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা চালানোর অপরাধে অভিযুক্তদের। যেখানে রয়েছে ছাত্র আন্দোলনের মুখে দেশ ত্যাগ করা শেখ হাসিনা। বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন তার মন্ত্রিসভার সদস্য, উপদেষ্টা, ১৪ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা, সাবেক সচিব, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি, শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা।
Advertisement
তাদের বিচারে সংশোধিত অধ্যাদেশে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে বলে গণ্য করা হয়। এছাড়া প্রথমবারের মতো গুমের অভিযোগও বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। তবে যুক্ত করা হয়নি দলের বিচারের কথা। এর মধ্যে শেখ হাসিনাসহ প্রায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করে প্রসিকিউশন।
এফএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম