ধর্ম

কাবিননামায় স্বাক্ষর করলে কি বিয়ে হয়ে যায়?

ইসলামে বিয়ের পদ্ধতি হলো, দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে এক পক্ষ ইজাব করেন বা প্রস্তাব দেন, আরেক পক্ষ গ্রহণ করেন বা কবুল করেন- এভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। সাধারণত বিয়ের ইজাব বা প্রস্তাব করা হয় কনেপক্ষের তরফ থেকে আর বর প্রস্তাব কবুল করেন। কনে নিজে অথবা কনের সম্মতি নিয়ে তার অভিভাবক যদি দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নিজে বা যিনি বিয়ে পড়াবেন তার মাধ্যমে প্রস্তাব দেন এবং বর ‘কবুল করলাম’ বলেন, তাহলে বিয়ে হয়ে যাবে।

Advertisement

আমাদের দেশে কাবিননামার মাধ্যমে বিয়ের সরকারি নিবন্ধন হয়। দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে মৌখিক ইজাব কবুল বলার মাধ্যমে শরঈ পদ্ধতিতে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তা সরকারিভাবে নিবন্ধন করা যেতে পারে। কিন্তু ইজাব-কবুল বলা ছাড়া শুধু কাবিননামায় স্বাক্ষর করলে বিয়ে শুদ্ধ হবে না।

কোনো বিয়ে যদি না জানার কারণে শুধু কাবিননামায় সাক্ষর করার মাধ্যমে হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব শরঈ পদ্ধতিতে বিয়ে করে নেওয়া কর্তব্য।

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য কতজন সাক্ষী প্রয়োজন?

বিয়ের আকদ কমপক্ষে দুই জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে হওয়া আবশ্যক। দুই জন সাক্ষীর উপস্থিতি ছাড়া বিয়ের আকদ শুদ্ধ হয় না। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, অভিভাবক ও দুই জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ছাড়া বিয়ে হয় না। (সহিহ ইবনে হিব্বান)

Advertisement

তবে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য দুই জন সাক্ষী নির্দিষ্ট করা জরুরি নয়। বিয়ে যদি অনেকের উপস্থিতিতে হয়, দুইজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করে সাক্ষী বানানো না হয়, তাহলেও বিয়ে হয়ে যাবে।

মসজিদে বহু মানুষের উপস্থিতিতে বিয়ের আকদ হলে সেখানে পাত্র-পাত্রী বা তাদের প্রতিনিধি ছাড়া সাক্ষী হওয়ার উপযুক্ত যারা উপস্থিত থাকবে, পাত্রী-পক্ষ ও পাত্র-পক্ষের ইজাব ও কবুল শুনবে, সবাই বিয়ের সাক্ষী গণ্য হবে।

কনের ‘ইজিন’ বা অনুমতি

বিয়ের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক কনের সম্মতি বা অনুমতি নেওয়া জরুরি। কনের সম্মতি ছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হয় না। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে তার স্পষ্ট সম্মতি বা নির্দেশনা ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী নারীকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কীভাবে অনুমতি নেবো? রাসুল (সা.) বললেন, তার চুপ থাকাটাই অনুমতি গন্য হবে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

তবে বিয়ের আকদের মজলিসে কনে বা পাত্রীর উপস্থিত থাকা জরুরি নয়। কনের পক্ষ থেকে অভিভাবক বা অন্য কেউ তার অনুমতি নিয়ে আসা যথেষ্ট।

Advertisement

ওএফএফ/এমএস