ধর্ম

পানি থাকা সত্ত্বেও তায়াম্মুম করে জানাজা আদায় করা যাবে?

ইসলামে তায়াম্মুম অজু বা গোসলের বিকল্প হতে পারে। যদি কেউ এমন কোথাও অবস্থান করে, যেখান থেকে এক মাইল বা এর বেশি দূরত্ব পর্যন্ত অজু-গোসলের জন্য পবিত্র পানি নেই অথবা অসুস্থ ব্যক্তি যদি পানি ব্যবহার করলে অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে, তাহলে অজু বা গোসলের বিকল্প হিসেবে তায়াম্মুম করতে পারে। আল্লাহ বলেন,

Advertisement

وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡهِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ عَفُوًّا غَفُوۡرًا

আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা থেকে আস কিংবা স্ত্রী সম্ভোগ কর এবং পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি অম্বেষণ কর, তা দিয়ে তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। (সুরা নিসা: ৪৩)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায় কেউ পানি না পেলে বা পানি ব্যবহার করতে পুরোপুরি অক্ষম হলেই শুধু তায়াম্মুম করতে পারে। পানি ব্যবহারের সক্ষমতা থাকা অবস্থায় তায়াম্মুম করে ফরজ বা নফল কোনো নামাজই আদায় করা জায়েজ নয় এবং আদায় করলে তা শুদ্ধও হবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করার জন্যও অজুর পরিবর্তে তায়াম্মুম করা বৈধ নয়। অর্থাৎ কখনও যদি অবস্থা এ রকম হয় যে মসজিদে নামাজের জামাত শেষ হয়ে যাচ্ছে, অজু করতে গেলে জামাত ছুটে যাবে, তায়াম্মুম করে জামাতে শরিক হওয়া যাবে, তাহলেও তায়াম্মুম করে জামাতে অংশগ্রহণ করা জায়েজ হবে না। অজু করে জামাত না পাওয়া গেলে একা নামাজ আদায় করতে হবে।

Advertisement

তবে জানাজার নামাজের ক্ষেত্রে এই বিধানে ভিন্নতা আছে। জানাজার নামাজের ক্ষেত্রে অজু করতে গেলে নামাজ ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলে তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করে নেওয়ার সুযোগ আছে।

আতা (রহ.) থেকে বর্ণিত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন,

إذَا خِفْتَ أَنْ تَفُوتَكَ الْجِنَازَةُ وَأَنْتَ عَلَى غَيْرِ وُضُوءٍ فَتَيَمَّمْ وَصَلِّ.

ওযু করতে গেলে যদি তোমার জানাজার নামাজ ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলে আপনি তায়াম্মুম করেই জানাজার নামাজ পড়ে নিন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ১১৫৮৬)

Advertisement

তায়াম্মুমের নিয়ম হলো, তায়াম্মুমের নিয়ত করে মাটি বা মাটিজাতীয় বস্তু যেমন বালু, পাথর, চুনা ও সুরমা ইত্যাদি কোনো কিছুতে দুবার হাত লাগানো, একবার হাত দিয়ে মুখ মাসাহ করা, আরেকবার কুনুই পর্যন্ত উভয় হাত মাসাহ করা।

তায়াম্মুম অজু-গোসলের বিকল্প এবং অজু গোসল যেসব কারণে ভাঙে; সেসব কারণ যেমন মলমুত্র ত্যাগ ইত্যাদি কারণে তায়াম্মুমও ভাঙে। এ ছাড়া যে কারণে তায়াম্মুম করা হয়েছিল, তা দূর হয়ে গেলেও তায়াম্মুম ভাঙে।

ওএফএফ/জিকেএস