গোসলের বিধি-বিধান


প্রকাশিত: ০৭:৩২ এএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রত্যেক কাজ ও কর্মে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলা অত্যন্ত আবশ্যক। আজকের বিষয় হচ্ছে গোসল। মুসলিম উম্মাহসহ সব মানুষ কিভাবে উত্তম পদ্ধতিতে গোসল করবে ইসলাম সে ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করেছেন। এটি খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। যা সবার জন্য জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-

গোসল কি?
গোসল শব্দটি আরবি। এলাকাভেদে একে স্নান করা, নাইতে যাওয়া ইত্যাদি বলে হয়ে থাকে। গোসল শব্দের অর্থ হচ্ছে সমস্ত শরীর ধোয়া। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় পবিত্রতা ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র পানি দ্বারা সমস্ত শরীর ধোয়াকে ‘গোসল’ বলা হয়।

গোসলের প্রকারভেদ ও নিয়ম
ক. ফরজ গোসল- জানাবাত তথা যৌন মিলনের পর; মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধের পর; সন্তান জন্মদানের রক্ত বন্ধ হওয়ার পর।

গোসলের ফরজ তিনটি- ১. কুলি করা, ২. নাকে পানি দেয়া, ৩. সমস্ত শরীর পানি দিয়ে ধোয়া যাতে চুল পরিমাণও শুকনো না থাকে।

খ. সুন্নাত গোসল- জুমআর নামাজের গোসল, দুই ঈদের নামাজের গোসল, হজ ও ওমরার ইহরামের জন্য গোসল, আরাফাহর দিনে দুপুরের গোসল।

গোসলের সুন্নাতগুলো- ১. বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা, ২. গোসলের নিয়্যাত করা, ৩. ডান হাতে পানি নিয়ে উভয় হাত কবজি পর্যন্ত ধোয়া, ৪. লজ্জাস্থান ধোয়া, ৫. শরীরের কোথাও নাপাকি থাকলে তা পরিস্কার করা, ৬. উভয় হাত ভালো করে ধুয়ে নামাজের ওজুর ন্যায় ওজু করা, ৭. ভালোভাবে কুলি করা, ৮. নাকের ভিতর ভালো করে পানি পৌঁছানো, ৯. সমস্ত শরীর ভালো করে ধোয়া। ক. প্রথমে ডান কাধের ওপর তিনবার পানি ঢালা, খ. দ্বিতীয়বার বাম কাঁধে তিন বার পানি ঢালা, গ. অতপর মাথা ও সমস্ত শরীরের ওপর তিনবার পানি ঢালা, ১০. গোসলের স্থান থেকে সরে গিয়ে উভয় পা ধোয়া।

গ. মুস্তাহাব গোসল- ইসলাম গ্রহণের জন্য, প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর অর্থাৎ ১৫ বৎসর হওয়ার পর, মস্তিষ্ক বিকৃতি ও সংজ্ঞাহীনতা দূর হওয়ার পর, সিঙ্গা লাগানোর পর, মৃত ব্যক্তির গোসল, ধর্মীয় উৎসব, মদিনা মুনাওয়ারায় প্রবেশকালে, মুযদালিফায় অবস্থানের জন্য ১০ জিলহজ সুবহে সাদিকের পর, মক্কায় প্রবেশকালে, তাওয়াফে জিয়ারতের জন্য, সূর্য ও চন্দ্রগ্রহনের সময়, ইস্তিস্কার নামাজের জন্য, ভয়ের নামজের জন্য।

গোসল ওয়াজিব হওয়ার কারণ-
১. ইহ্‌তিলাম- সহবাস ব্যতিত পুরুষ-মহিলার বীর্য বের হলে, তা যেভাবেই হোক, ২. স্ত্রী সহবাস, ৩. স্বপ্নদোষ, ৪. হস্তমৈথুন, ৫. হায়িজ বা ঋতুস্রাব ব্ন্ধ হলে, ৬. নিফাস বা সন্তান প্রসব পরবর্তী ইদ্দতকালীন সময় শেষ হলে।

পরিশেষে...
উপরোক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সুন্দরভাবে পবিত্রতা অর্জনের জন্য যথাযথভাবে গোসল করাই ইসলামের দাবি। সব মানুষ যাতে যথাযথ নিয়মে গোসল করে পবিত্র জিন্দেগি যাপন করতে পারে, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই, তাওফিক চাই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন। দান করুন উত্তম প্রতিদান। আমিন।

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

# আহকামে ওজু তথা ওজুর ফরজসমূহ
# ওজুর তারতিব ও সুন্নাতসমূহ
# ওজুর মাকরূহ ও ভঙ্গের কারণ


এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।