আইন-আদালত

বিচারিক আদালতের রায় ছিল পক্ষপাতদুষ্ট: হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার অভিযোগে করা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) আপিল ও জেল আপিলের ওপর বাংলায় রায় ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত হাইকোর্ট।

Advertisement

বাংলায় রায়ের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত অংশটুকু আদালত ঘোষণা করেন। রায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ৯ আসামিসহ দণ্ডিত বিএনপির ৪৭ নেতাকর্মীর সবাইকে খালাস দেন হাইকোর্ট।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল-ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জামিল আক্তার এলাহী, মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, এ এইচ এম কামরুজ্জামান মামুন, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, মো. মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান।

Advertisement

আরও পড়ুন শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ফাঁসির ৯ জনসহ সব আসামি খালাস

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, বিচারিক আদালত যে রায় দিয়েছেন, ‘তা পক্ষপাতদুষ্ট এবং বিশেষ কোনো ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত। বিচারিক আদালতের রায়ে বিচারকের বিচারিক মননের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। বিজ্ঞ বিচারক গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে এই রায় দিয়েছেন। এ যেন বেড়ায় খেত খাওয়ার মতো। মূলত এটি একটি বিদ্বেষপ্রসূত মামলা, যেখানে তিলকে তাল করা হয়েছে।’

এ মামলার সাক্ষ্য নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে উচ্চ আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘তর্কিত ঘটনাটি ঘটে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনে। স্টেশনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন থাকেন। প্রকৃতপক্ষে সেদিন কী ঘটেছিল, নিশ্চয়ই তারা তা দেখেছেন। কিন্তু এ মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী নিরপেক্ষ কোনো ব্যক্তিকে সাক্ষী করা হয়নি। সাক্ষী করা হয়েছে, একটি রাজনৈতিক দলের অনুগত ও পদধারীদের। কোনো চাক্ষুষ সাক্ষী না থাকলেও এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে ৩৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন ২৫ জন। রাষ্ট্রপক্ষের সব সাক্ষীর সাক্ষ্যই মূলত পক্ষপাতদুষ্ট বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’

আদালত বলেন, ‘সরকারের অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কী বলা যায় তা বলার ভাষা জানা নেই। আধুনিক রাষ্ট্র কল্যাণের না ধ্বংসের তা আমাদের বোধগম্য নয়।’

এই মামলায় বিচারিক আদালতের রায় ছিল অমানবিক বলেও মন্তব্য করেন আদালত।

Advertisement

এফএইচ/বিএ/এএসএম