দেশজুড়ে

ঈশ্বরদী বিএনপির ৯ নেতা খালাস, মিষ্টি বিতরণ

পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া বিএনপির ৯ নেতাসহ সবাইকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

Advertisement

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঈশ্বরদী শহরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যান্ডপার্টি নিয়ে রং ছিটিয়ে নেচে-গেয়ে উল্লাস করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করছেন।

আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী কায়সার কামাল শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. মাকসুদ উল্লাহ, জামিল আক্তার এলাহী ও এএইচএম কামরুজ্জামান মামুন। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অটনি জেনারেল মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান।

খালাস পাওয়া ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, সর্বপ্রথম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি সার্বক্ষণিক এ মামলায় সহযোগিতা ও সুদৃষ্টি দিয়েছেন। তার জন্যই এ মিথ্যা মামলা থেকে সবাই খালাস পেয়েছেন।

Advertisement

বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান বলেন, মিথ্যা ও বানোয়াট একটি মামলায় সাড়ে ৫ বছর বিএনপির ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে ছিলেন। ট্রেনের কথিত হামলায় মামলায় একজন মানুষও আহত হয়নি।

রায় ঘোষণার পর দুপুর ১টার পর থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা পৌর শহরের রেলগেট চত্বরে সমবেত হন। সেখান থেকে একটি আনন্দ মিছিল শহরের রেলগেট থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

পথসভায় পৌর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ আতাউর রহমান পাতা, পৌর বিএনপি নেতা বিষ্টু সরকার, সাহাপুর ইউনিয়ন সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেন্টু সরদার, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক মতিয়ার রহমান, পাকশী বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সদ্য কারামুক্ত এনামুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

একইদিন একটি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করে বিএনপির আরেক অংশের নেতাকর্মীরা। এটি শহরের আলহাজ্ব মোড় থেকে শহর প্রদক্ষিণ করে বিভিন্ন ইউনিয়নের সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

Advertisement

২০১৯ সালের ৩ জুলাই এ মামলার রায় দেন স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক ও পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. রুস্তম আলী। এ রায়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয় পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোকলেছুর রহমান বাবলু, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি একেএম আক্তারুজ্জামান আক্তার, সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহাবুবুর রহমান পলাশ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম শাহীন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা নূরে আলম শ্যামল, বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম অটলসহ ৯জনকে। এ ছাড়া ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এর আগে ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে ট্রেনে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন শেখ হাসিনা। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ঢোকার সময় হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ট্রেনে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলার অভিযোগে ঈশ্বরদী জিআরপি (রেলওয়ে পুলিশ) থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

শেখ মহসীন/আরএইচ/জেআইএম