অর্থনীতি

৮৮৮ কোটি টাকার সার-ফসফরিক অ্যাসিড কিনবে সরকার   

দেশের কৃষিখাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে পৃথক পাঁচ চুক্তির আওতায় এক লাখ টন বিভিন্ন ধরনের সার কিনবে সরকার। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সার উৎপাদনে ব্যবহারের জন্য ৪০ হাজার টন ফসফিক অ্যাসিড আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৮৮ কোটি ১৯ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা।  মঙ্গলবার ( ৪ ফেব্রুয়ারি) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই সার ও ফসফরিক অ্যাসিড কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদ।  বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে ২য় লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিএডিসি কর্তৃক সৌদিআরব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় বিদ্যমান চুক্তির শর্তসমূহ অভিন্ন রেখে পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা হয়।   সার আমদানি চুক্তিতে উল্লেখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে সৌদি আরব থেকে দ্বিতীয় লটে ৪০ হাজার (+১০%) টন ডিএপি সার আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর জন্য বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৯৮ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রতি টন ডিএপি সারের দাম পড়বে ৬১১ ডলার।  বৈঠকে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) কাছ থেকে ১২তম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের এক প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।   ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাফকো থেকে ৫ দশমিক ৪০ লাখ টন ইউরিয়া সার ক্রয়ের সংশোধিত চুক্তি সই হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১২তম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের জন্য প্রাইস অফার পাঠানোর অনুরোধ করা হলে কাফকো প্রাইস অফার পাঠায়।  কাফকোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সারের মূল্য নির্ধারণ করে ১২তম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি টন ৩৮৯ দশমিক ৭৫ ডলার হিসাবে মোট ব্যয় হবে এক কোটি ১৬ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৪২ কোটি ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

Advertisement

আরও পড়ুন৯৭ টাকা কেজিতে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কিনবে সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে  বৈঠক সূত্র জানায়, সৌদি আরব থেকে ১৬তম লটে ৩০ হাজার টন (+১০%) বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির আর একটি অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। ২০২৪ সালের ১১ জুন অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনক্রমে ২০২৪- ২৫ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ৪০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির জন্য চুক্তি সই হয়।   সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে মূল্য নির্ধারণ করে ১৬তম লটে ৩০ হাজার টন সার কেনা হবে। প্রতি টন ৩৯৫ দশমিক ১৬ ডলার হিসাবে মোট ব্যয় হবে এক কোটি ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৪৪ কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার ৬০০ টাকা।  এছাড়াও সভায় চট্টগ্রামের ডিএপিএফসিএলের জন্য ২০ হাজার টন (+১০%) ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির এক প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ডিএপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক অ্যাসিড বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।  ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২০ হাজার টন (+১০%) ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রস্তাব জমা পড়ে। ৩টি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।   দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই, ইউএই এই ২০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড সরবরাহ করবে। প্রতি টন ফসফরিক অ্যাসিডের দাম ৬৩৩ দশমিক ৪২ ডলার। এ হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় মোট ব্যয় হবে ১৫২ কোটি ২ লাখ ৮ হাজার টাকা।  সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের ডিএপিএফসিএলের জন্য ২০ হাজার টন (+১০%) ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির অপর একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এর জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র একটি প্রস্তাব জমা পড়ে। প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।  দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই, ইউএই এই সার সরবরাহ করবে। প্রতি টন ফসফরিক অ্যাসিডের দাম ৬১৭ দশমিক ৭৬ ডলার। এ হিসাবে ২০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড ক্রয়ে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি ৭৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪০০টাকা। এমএএস/কেএসআর