পটুয়াখালীসহ দেশের প্রত্যন্ত এলাকার হাট বাজারের খাদ্য সামগ্রীতে মিলছে ক্ষতিকারক উপাদানের উপস্থিতি। মাছ, মাংস, দুধ, বেকারি পণ্য থেকে শাক সবজি সবকিছুই সতেজ রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকারক বিভিন্ন কেমিকেল। এর ফলে মানুষের ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
Advertisement
সম্প্রতি জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় এসব ক্ষতিকারক খাবার চিহ্নিত করতে ভ্রাম্যামাণ ল্যাবরেটরি নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। আর সেই ল্যাবের পরীক্ষায় বেরিয়ে আসে বিভিন্ন খাবারে ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি।
জেলার প্রত্যন্ত এলাকার হাট-বাজার থেকে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানেই মোবাইল ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মোবাইল ল্যাবরেটরি। আধুনিক এই পরীক্ষাগারের ফলাফল দেখলে যে কারো চোখ কপালে উঠবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরির ল্যাব টেকনিশিয়ান মো. শরফুদ্দিন জানান, পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় তারা যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন তাতে গরুর দুধে মিলছে ডিটারজেন্ট, হলুদের গুঁড়ার সঙ্গে মেটানিল ইয়েলো, মরিচের গুঁড়ায় ইটের গুঁড়া, সবুজ শাক-সবজিতে পাওয়া যাচ্ছে মেলাসাইট গ্রিন। এছাড়া বিভিন্ন বেকারি পণ্যে ক্ষতিকারক রং ও কেমিকেলের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে।
Advertisement
তিনি জানান, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এই মোবাইল ল্যাবে ৩৩টি প্যারামিটারে এসব খাদ্য সামগ্রী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাৎক্ষণিকভাবে তারা ফলাফল দিচ্ছেন।
পটুয়াখালী জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান জানান, ‘নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে তারা কাজ করছেন। বিশেষ করে উঠান বৈঠক, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেন। এছাড়া বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ গুলোতেও তারা অভিযান পরিচালনা করেন। যেসব খাবারে ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে জানান নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এই সহকারী পরিচালক।
তবে ক্ষতিকর এসব খাদ্য সামগ্রী খাওয়ার ফলে মানব শরীরে ক্যানসারসহ বিভিন্ন মরণব্যাধী সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায় বলে জানান পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে খাবারটি খাচ্ছি সেটি যেন নিরাপদ হয়। বর্তমানে মানুষ যত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তার বড় একটি অংশ বিভিন্ন অনিরাপদ খাবার খাওয়ার কারণে সংক্রমিত হচ্ছে। আর এ কারণে কোনো খাবার খাওয়ার আগে সেটি শতভাগ নিরাপদ কি না সে বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।’
Advertisement
এফএ/জিকেএস