ক্যাম্পাস

রাবিতে তিন দিনব্যাপী বিজ্ঞানমেলা শুরু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) তিন দিনব্যাপী বিজ্ঞানমেলা শুরু হয়েছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) সামনে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব।

Advertisement

‘আরইউএসসি ন্যাশনাল সায়েন্স ফিয়েস্টা’ শীর্ষক এ মেলায় রাজশাহীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মেলায় অর্ধশতাধিক স্টলে নিজেদের উদ্ভাবন তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থীরা।

উদ্বোধনের পরে উপাচার্য মেলা পরিদর্শন করেন। এসময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দিন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান, সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক শেখ সৈকতসহ সাবেক-বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, টিএসসির সামনের মাঠে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্টের প্রায় অর্ধশতাধিক স্টল নিয়ে বসেছে। এসব উদ্ভাবন দেখতে মেলায় শিশুদের নিয়ে অভিভাবকসহ ভিড় জমাচ্ছেন আগ্রহী দর্শনার্থীরা।

Advertisement

এবারের মেলায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে, সায়েন্স অলিম্পিয়াড, কেইস সলভিং, সায়েন্টিফিক পেইন্টিং কম্পিটিশন, ওয়াল ম্যাগাজিন, সায়েন্টিফিক ডিবেট, পোস্টার প্রেজেন্টেশনসহ ১৩টি সেগমেন্ট থাকছে। এছাড়া মোবাইল অ্যাপ আইডিয়া কম্পিটিশন, রুবিক্স কিউব, এআই বেইসড বিজনেজ আইডিয়া কম্পিটিশন, দাবা প্রতিযোগিতা, ফটোগ্রাফি কনটেস্ট রয়েছে। এসব প্রতিযোগিতায় সবাই অংশ নিতে পারবেন।

মেলায় অংশ নেওয়া দশম শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া খাতুন বলেন, গত দুই বছর ধরে সায়েন্স ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত আছি। এখানে বিভিন্ন ধরনের সেগমেন্টে থাকে। শিক্ষার্থীরা তাদের ইচ্ছেমতো বেছে নেওয়ার সুযোগ পায়। নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাই আমরা। দিনদিন বিজ্ঞান মেলার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আমি খুবই গর্বিত এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পেরে।

নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আবুল হাসনাত বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে পারি। এটা বেশ ভালো একটি উদ্যোগ। এই আয়োজনের মাধ্যমে অনেক তরুণ বিজ্ঞানী উঠে আসবে। সমাজ ও রাষ্ট্রের উপকার হবে। এর মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারবো এবং দেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

রাবি সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি মাসুদ বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করি বিজ্ঞানধর্মী আয়োজন করার। বাংলাদেশ থেকেই নিউটান বা বর্তমান সময়ের ইলন মাস্ক হওয়া সম্ভব। সেই সুযোগ আমাদেরকেই তৈরি করে দিতে হবে। দেশে অনেক কিছু নিয়েই আমরা কাজ করি কিন্তু বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আমরা বইরের দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখতে পাই তারা কতটা উন্নত। এর মূল কারণ সে দেশগুলোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দিকে নির্ভরশীলতা। বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে তুলে ধরতে আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দিকে বেশি সুযোগ তৈরি করতে হবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে উন্নত হিসেবে দেখার জন্যই আমরা এই আয়োজন করে থাকি।

উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, এটি খুবই ভালো উদ্যোগ এবং ধারাবাহিকভাবে হচ্ছে। আমি প্রজেক্টগুলো ঘুরে দেখলাম। খুবই ইনোভেটিভ। আমি মনে করি এই উদ্যোগ সামনের দিনগুলোতে আরও শক্তিশালী হবে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিজ্ঞানচর্চার স্পৃহা সায়েন্স ক্লাব ইতোমধ্যে বাড়িয়ে তুলেছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরও বড় ভূমিকা পালন করবে।

মনির হোসেন মাহিন/আরএইচ/এমএস