সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণার দাবিতে এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা এটির নাম দিয়েছেন, ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’।
Advertisement
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। ঘোষণা অনুযায়ী- শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার মধ্যে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দিলে উত্তর সিটি এলাকা অবরোধ করবেন তারা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের গণঅনশন, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চলছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় পাঁচ শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন কর্মসূচি দিয়ে এ দফায় আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর থেকে তারা গুলশান-মহাখালী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পাশাপাশি চলছে গণঅনশন কর্মসূচিও। সেই হিসাবে টানা প্রায় ৫৫ ঘণ্টা অনশনে শিক্ষার্থীরা। এতে অন্তত ১০ জনের অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
Advertisement
এদিকে, দাবি আদায়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গুলশান-১ মোড়ে যান তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা সেখানে অবরোধ করেন। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক তখন বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হওয়া গাড়িগুলোকে মোড়ের চারপাশের সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণার দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
আরও পড়ুন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধরাত ১০টার দিকে প্রায় আধাঘণ্টা বিক্ষোভের পর শুলশান-১ মোড় ছেড়ে দেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা একটি মিছিল নিয়ে তিতুমীর কলেজের সামনে চলে আসেন। রাত পৌনে ১২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গুলশান থেকে মহাখালী ও মহাখালী থেকে গুলশান অভিমুখে যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করছেন।
রাতে হল থেকে বেরিয়ে আন্দোলনে ছাত্রীরাসন্ধ্যার পর কলেজের সামনের সড়কে শুধু ছাত্রদের অবস্থান করতে দেখা যায়। তবে রাত ৯টার দিকে আবাসিক হল থেকে বেরিয়ে আসেন ছাত্রীরাও।
বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থানরত ছাত্রদের সঙ্গে যোগ দেন। রাতভর ছাত্রীরাও সেখানে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
Advertisement
ছাত্রীরা বলেন, টানা অনশনে তাদের ভাইয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনো ঘোষণা আসছে না। সেজন্য ছাত্রীরাও এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ বাড়িয়ে দাবি জোরালো করতে ভূমিকা রাখছেন।
শিক্ষার্থীদের ৭ দাবি‘তিতুমীর ঐক্য’ ব্যানারে সাত দফা দাবিতে এ আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো- তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ বা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আইন ও সাংবাদিকতা বিষয় চালু করা।
এছাড়া অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসনসংখ্যা সীমিতকরণ ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার নির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।
এএএইচ/বিএ