বিনোদন

আহত অভিনেত্রীর কপালে ১০ সেলাই

ব্যাটারি-চালিত রিকশার ধাক্কায় মারাত্মক আহত হয়েছেন অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। চোখের ওপরে ভয়াবহ আঘাত পেয়েছেন তিনি। হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি ১০টি সেলাই দিতে হয়েছে কপালে। জাগো নিউজকে আজ দুর্ঘটনার বর্ণনা দেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।

Advertisement

দুর্ঘটনা নিয়ে আজ (৩১ জানুয়ারি) শুক্রবার ফেসবুকে শাহনাজ খুশি একটি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মতো শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের ওপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি, এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’

ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় আহত হয়েছেন শাহনাজ খুশি। ছবি: ফেসবুক থেকে

জাগো নিউজকে খুশি জানান, গত মঙ্গলবার সকালে প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বের হয়েছিলেন তিনি। রমনা পার্কে হেঁটে বাসায় ফেরার সময় একটা গলির ভেতর হঠাৎ ব্যাটারিচালিত রিকশা ঢুকে পড়ে। তাকে ফেলে তার গায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। ভয়াবহ আঘাতপ্রাপ্ত হয় তার চোখ মুখ। তিনি বলেন, ‘পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে গায়ের ওপর দিয়ে চালিয়ে গেছে। ডাক্তার বললো আর্টারি কাটা পরেছিল। অনেকক্ষণ টেপ দিয়ে আটকে রেখে পরে আর্টারি রিপ্লেস করে সেলাই দিয়েছে। আইবলের ওপরের আঘাত হওয়ায় অ্যানেন্থেশিয়া দিতে পারেনি। চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাতে। বুকের খাঁচায় এখনও ব্যাথা আছে।’

Advertisement

ঈদের নাটকের শুটিং নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছিলেন শাহনাজ খুশি। সেসব নাটকের কাজ ছেড়ে দিতে হয়েছে তাকে। এমনকি কবে আবার নাটকের কাজ শুরু করবেন সেটাও নিশ্চিত নয়। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘ইন্টারনাল ব্লিডিংয়ের কারণে মুখ ফুলে আছে। ডাক্তার বলেছেন, স্বাভাবিক হয়ে উঠতে আরও সময় লাগবে। মাথার অর্ধেক অবশ হয়ে আছে, সিটি স্ক্যান করা দরকার। এই অবস্থায় করা যাবে না। দুই একদিন পর করতে হবে। সাত পর্বের ঈদের নাটক ছেড়ে দিতে হয়েছে।’

অনুরাগী ও অনুসারীদের সতর্ক করে তিনি লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা-বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন, অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়তো ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি, কোনো বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি-চালিত অসভ্য-বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতভ্রমণ শেষে, অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যানচালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াকা করে না!’

ঈদের নাটকের কাজ ছেড়ে দিতে হয়েছে আহত অভিনেত্রীকে। ছবি: ফেসবুক থেকে

দুর্ঘটনার আঘাত কতটা ভয়াবহ সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই! জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কি না, সেটা যদিও ফিরি, রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না!’

Advertisement

আরও পড়ুন: যখনই ভাবলাম, নিজেকে একটু ভালোবাসি… যৌথ পরিবারের অসহায় বোনদের প্রতিনিধি হয়ে কাঁদালেন খুশি 

আহত, কাতর অভিনেত্রী প্রশ্ন রেখেছেন, এই অবস্থায় কার কাছে সুরক্ষা চাইবে মানুষ? তিনি লিখেছেন, ‘কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, ‘এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেনে, বাসে, রিক্সা, প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই, অস্ত্রসহ যে কোন প্রতিষ্ঠানে ঢুকে চাঁদাবাজী, দখলবাজী, ফিটনেসবিহীন গাড়ির দৌরাত্ব্যে অহরহ সড়ক দুর্ঘটনা, সন্ধ্যাপরে রাস্তাঘাট-সিগন্যালে পুলিশ বা ট্রাফিক না থাকা, যে কোনো রাস্তায় অবরোধ- মারামারি, তাহলে আমাদের সুরক্ষাটা কে দেবে? কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা বা সুশৃংখল শিক্ষাঙ্গন? আপনারাও কি ভাবছেন?’

আরএমডি