দেশজুড়ে

৯ বছরেও শেষ হয়নি জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণকাজ

৯ বছরেও শেষ হয়নি ৯৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে জামালপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নির্মাণকাজ। এতে উন্নত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জামালপুরসহ আশপাশের চার জেলার ৫০ লক্ষাধিক মানুষ। দ্রুত হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

Advertisement

স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জামালপুরসহ পার্শ্ববতী শেরপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও টাঙ্গাইলের বেশ কয়েকটি উপজেলার ৫০ লক্ষাধিক মানুষের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের (চিকিৎসা শিক্ষা-১) এক প্রজ্ঞাপনে জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজকে ‘জামালপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল’ নামে নতুন নামকরণ করা হয়। নতুন নামকরণ হলেও মূল ভবনের কাজ নিয়ে এখনো দুশ্চিন্তায় সাধারণ মানুষ।

আরও পড়ুন পছন্দের ক্লিনিকে টেস্ট না করানোয় রিপোর্ট ছুড়ে ফেললেন চিকিৎসক

পৌর শহরের মনিরাজপুরে ২০১৬ সালে ৩৫ একর জমির ওপর শুরু হয় এর নির্মাণকাজ। তবে মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন, নার্সিং কলেজ ও বিভিন্ন আবাসিক ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় সম্পন্ন হলেও এখনো শুরু হয়নি ৫০০ শয্যা হাসপাতালের মূল ভবনের কাজ। কলেজের ৩০টি ভবনের মধ্যে ২৬টি ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হলেও ভবনগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অনেক ভবন যত্নের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতগুলো ভবন ওঠার পরও হাসপাতালের মূল ভবনের কাজ এখনো শুরুই হয়নি। মূল হাসপাতাল ভবনটি যে স্থানটিতে ওঠার কথা, সেখানে এখন মাছ চাষ হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জামালপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জামালপুর গণপূর্ত বিভাগ। প্রকল্পের কাজ ২০১৬ সালের জুনে শুরু হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছিল ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত। এরপর আবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। তৃতীয়বার প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু এই ৯ বছরে কাজের অগ্রগতি মাত্র ৪০ শতাংশ। মূল ভবনের স্থানে এখনো জলাশয় রয়েছে। সেখানে মাছ চাষ হচ্ছে। তিন দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকল্পের ব্যয় দাড়িয়েছে ৯৫০ কোটি টাকা।

Advertisement

আরও পড়ুন ইউনাইটেড হাসপাতালের অনুমোদন না থাকা ‘গুরুতর অভিযোগ’

স্থানীয় বাসিন্দা মুকুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেডিকেল কলেজটি চালু হলে রোগীদের আর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হতো না। অনেক রোগী সেখানে নেওয়ার পথেই মারা যান।’

কালাম আহমেদ নামের আরেকজন বলেন, ‘সামান্য হার্টের ব্যথাতেই বা সামান্য কারণেই আমাদের ঢাকা, ময়মনসিংহ এমনকি ইন্ডিয়া পর্যন্ত যেতে হয়। রোগীদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না।’

আরও পড়ুন হেলথ কেয়ার সেন্টারই নানান ‘রোগে’ আক্রান্ত-

মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী জোবায়ের বলেন, ‘স্থানীয় মেয়র ও মির্জা আজমের গাফিলতির কারণে দীর্ঘ সময়েও মেডিকেল কলেজের কাজ এখানো শেষ হয়নি। ৪-৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে কষ্ট করে আমাদের ক্লাস করতে হয়।’

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মেডিকেল কলেজ চালু না হওয়ার কারণে জেনারেল হাসপাতালের ওপর চাপ বেড়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতালটি জিওবি খাতে নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। সব কাগজপত্র ঊর্ধ্বতন অফিসে পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগির কাজ শুরু হবে।

এসআর/জিকেএস