সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংসদে ৪২টি সংরক্ষিত আসন চায় জাতীয় হিন্দু মহাজোট। পাশাপাশি এসব আসনে আলাদা নির্বাচনব্যবস্থার দাবি তাদের৷ হিন্দু মহাজোট মনে করে, আলাদা নির্বাচন হলে সংসদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
Advertisement
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কমিটির প্রস্তাবে হিন্দুদের স্বার্থ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কোনো গঠনমূলক সুপারিশ না থাকা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি অনুযায়ী আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থার প্রস্তাব না থাকার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল। বক্তব্য রাখেন সভাপতি অ্যাড. দীনবন্ধু রায়, যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জয় ফলিয়া, বিশ্বনাথ মোহন্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর কুমার বর্মন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রতিভা বাগচী, যুব মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. মৃণাল কান্তি মধু রাজা, সহ-সভাপতি তপন মজুমদার, লিটন দাস, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজীব কুণ্ড তপু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিলয় পালসহ হিন্দু মহাজোট, যুব মহাজোট ও ছাত্র মহাজোটের নেতৃবৃন্দ।
লিখিত বক্তব্যে মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ। এর মধ্যে হিন্দু ১০ শতাংশ। বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ২ শতাংশ। সংসদীয় আসন ৩৫০ হলে সে অনুপাতে ৪২টি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। এর ৩৮টি হিন্দুদের জন্য, ৩টি বৌদ্ধদের জন্য ও ১টি খ্রিষ্টানদের জন্য থাকতে হবে। এগুলোতে আলাদা নির্বাচন হতে হবে।
Advertisement
তিনি বলেন, স্বাধীনতার আগে থেকেই বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় দেশীয় ও বৈদেশিক রাজনীতির গ্যাঁড়াকলে পিষ্ট হয়ে আজ অস্তিত্বহীনতার মুখোমুখি। ‘মাইনরিটি কার্ড’ এখন রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুকে ভোট বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। অথচ সংখ্যালঘু সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা কেউ বলছে না। সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এক ভীতিময় পরিবেশে বসবাস করছে। প্রতিনিধিত্বহীনতায় হিন্দু জনসংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। ৩৩ শতাংশ থেকে কমে তা এখন ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। এর অবসান ঘটাতে হবে। সংখ্যালঘু সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উজ্জ্বল করতে জাতীয় সংসদসহ সব ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত আসন ও আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায়ও আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থার দাবি করেন। এসময় তিনি বলেন, তাদের আর কোনো দাবি নেই। এই দাবি পূরণ না হলে ভোটবর্জন ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসইউজে/এএমএ/এএসএম
Advertisement