রাজনীতি

এক কোটি প্রবাসীর অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করুন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মরত আছেন উল্লেখ করে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের প্রতি এই প্রবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রবাসী কর্মীদের অধিকার ও মর্যাদার দাবিতে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।

এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, এ বি এম খালিদ হাসান, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ সম্পাদক ড. বেলাল হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে পরিবার পরিজন ফেলে দূর পরবাসে কঠিন জীবনযাপন করলেও প্রবাসীদের জীবনযাত্রার মান ও মর্যাদার আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি আর লুটপাটে দেশ যখন রিজার্ভশূন্য হয়ে পড়ে, সেই সময় প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারাই দেশের অর্থনীতি সচল রাখেন। একইভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন আন্দোলনেও রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে, এমনকি জেল জুলুমের শিকার হয়েও জনতার মুক্তি আন্দোলনে তারা অনন্য ভূমিকা রাখেন।

Advertisement

ব্যারিস্টার ফুয়াদ আরও বলেন, প্রবাসীরা কঠোর পরিশ্রম করেও তাদের প্রাপ্য মর্যাদা, ন্যায্য অধিকার ও প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তাে থেকে বঞ্চিত, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে লাঞ্ছিতও হচ্ছেন তারা। দেশের অর্থনীতিতে অবদান ও প্রবাসে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে প্রত্যেক দূতাবাসকে দালাল ও দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। দ্বৈত নাগরিকত্বের বাধা দূর করে দক্ষ প্রবাসীদেরকে দেশসেবার সুযোগ দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

এসময় প্রবাসীদের যেসব সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়-

১. পাসপোর্ট নবায়নসহ দূতাবাস সংশ্লিষ্ট কাজে দীর্ঘসূত্রিতা।

২. দূতাবাসের প্রশাসনিক ফি প্রদানের জটিল পদ্ধতি।

Advertisement

৩. অভিবাসীদের কর্মসংস্থানের অভাবে বা অন্য কারণে তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হলে তারা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির স্বীকার হন। যা তাদেরকে গ্রেফতার, আটক এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে রাখে।

৪. ⁠প্রবাসে কর্মরত ব্যক্তি মারা গেলে তার মরদেহ বহনের খরচ পরিবারকে পাঠাতে হয়। পরিবার যখন কর্মক্ষম প্রিয়জনের শোকে, তখন তাকে ব্যস্ত হতে হয় তার লাশ বহনের খরচ জোগাড়।

৫. মৃত ব্যক্তির পরিবারের সরকার ঘোষিত ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে জটিলতা।

৬. বিভিন্ন অপরাধমূলক নেটওয়ার্কে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ।

৭. অভিবাসীরা প্রায়ই অতিরিক্ত নিয়োগ ফি এর কারণে চড়া সুদে ঋণ নেন। এই ঋণ পরিশোধ করতে স্বল্প পারিশ্রমিকে কাজ করতে বাধ্য হন তারা।

৮. দেশ ও বিদেশের কিছু অপরাধীচক্র ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠায়।

সমস্যা সমাধানে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়-

১. আইনি সমস্যা সমাধানে দূতাবাসগুলোতে লিগ্যাল অফিসার নিয়োগ দিতে হবে।

২. বিদেশি মিশনে রেমিট্যান্স ফ্যাসিলিটেশন অফিসার নিয়োগ দিতে হবে।

৩. বিভিন্ন কারণে কারাগারে আটক বাংলাদেশি অভিবাসীদের আইনি সহায়তা দিতে হবে।

৪. দেশে ও প্রবাসে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী ঋণ প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।

৫. জনশক্তি রপ্তানি সিন্ডিকেট বিলুপ্ত করে নিয়োগকারী দেশের সঙ্গে আলোচনার জন্য এজেন্ট নিয়োগ করতে হবে।

৬. প্রবাসে কর্মরত কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার লাশ বিনা খরচে দেশে আনার ব্যবস্থা করতে হবে এবং পরিবারকে ৩ লাখ টাকার পরিবর্তে ৬ লাখ টাকা দিতে হবে।

৭. সর্বস্তরে প্রবাসীদের সম্পদ ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

৯. প্রবাসীদের ভোটার আইডি কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে সব ধরনের ভোগান্তি দূর করা।

এএএম/এএমএ/জেআইএম