সিলেটে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে পরিবার পরিকল্পনায় নিয়োগপ্রাপ্ত আটজনের বিরুদ্ধে এবার আদালতে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে সিলেটের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা করেন দুদক সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক নিঝুম রায় প্রান্ত।
মামলায় জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত আটজন ও বেআইনিভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে সিলেট জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী পরিচালক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক (সাময়িকভাবে বরখাস্ত) লুৎফুন্নাহার জেসমিন এবং সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী ও বর্তমানে প্রেষণে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে নিযুক্ত বরুণ ছত্রীকে আসামি করা হয়।
নিয়োগপ্রাপ্ত আটজন হলেন- তাসলিমা আক্তার, তাহসিন মাসুমা কচি, শক্তি রানী পাল, স্নিগ্ধা বিশ্বাস, পূর্ণিমা নম, পলি রানী দাশ, মন্টি সরকার ও পপি দাশ। তারা একেক জায়গায় একেকটি ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।
Advertisement
দুদক সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক নিঝুম রায় প্রান্ত জাগো নিউজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত আট আসামির বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করেন সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল মনসুর আসজাদ।
মামলায় আটজনকে আসামি করা হলেও সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক লুৎফুন্নাহার জেসমিন এবং জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে নিযুক্ত বরুণ ছত্রীর সংশ্লিষ্টতা পায় পুলিশ। পরে মামলাটি সিইআইডিতে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে লুৎফুন্নাহার জেসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তিনি গোপনে আমেরিকা চলে গেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
Advertisement
দুদক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ১০ জনকে আসামি করে মামলা হয়। মামলায় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের দুজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখতিয়ারবহিভূর্ত ও বেআইনিভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে আটজনকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২২ ও ২০২৩ সালের বিভিন্ন সময়ে এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলার আরজিতে বলা হয়, চাকরির আবেদনে নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা গোপন করে সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলার ভুয়া স্থায়ী ঠিকানা তৈরি করে বিভিন্ন পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন ওই আটজন। লুৎফুন্নাহার জেসমিন ও বরুণ ছত্রী পরস্পর যোগসাজশে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তাদের অবৈধভাবে নিয়োগ দেন।
দুদক সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক নিঝুম রায় বলেন, জেলা নিয়োগ ও বাছাই কমিটির সুপারিশবহির্ভূত আটজনের অনুকূলে নিয়োগপত্র জারি করা হয়েছিল। এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে। পরে দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার আদালতে মামলাটি করা হয়।
মামলার বাদী সিলেট সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল মনসুর আসজাদ জাগো নিউজকে বলেন, মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে নামোল্লেখ করা আটজন ছাড়াও আরও কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। তবে মামলার অন্যতম আসামি লুৎফুন্নাহার জেসমিন আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও বিদেশ চলে গেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।
আহমেদ জামিল/জেডএইচ/জেআইএম