সাফিনাতুন জাহান সাবরিন
Advertisement
পাহাড়, সমুদ্র, ঝরনা, চা বাগান সব আছে আছে চট্টগ্রামে। সৃষ্টিকর্তা নিখুঁত সাজে সাজিয়েছেন চট্টগ্রামকে। চট্টগ্রাম শহরের অন্যতম সুন্দর একটি উপজেলা হচ্ছে বাঁশখালী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই বাঁশখালী। ডে লং ট্যুরের জন্য খুবই দারুণ একটি জায়গা। কী নেই বাঁশখালীতে? সমুদ্রসৈকত থেকে শুরু করে চা বাগান ও আছে। যারা একদিনের ট্যুরে কোথাও ঘুরতে যেতে চান, তারা নিশ্চিন্তে যেতে পারেন বাঁশখালীতে।
বাঁশখালী চা বাগানসাধারণত আমরা চায়ের শহর কিংবা চায়ের রাজ্য বলতে বুঝি সিলেটের শ্রীমঙ্গলকে। তবে চট্টগ্রাম শহরের খুব কাছেই বাঁশখালী উপজেলাতে আছে দেশের প্রথম সারির একটি সুন্দর চা বাগান। বাঁশখালী চা বাগান, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি চাঁদপুর বেলগাঁও চা বাগান হলে এটি বাঁশখালী চা বাগান হিসেবে বেশি পরিচিত।
যারা নানা ব্যস্ততায় চায়ের রাজ্য যেতে পারছেন না তাই বলে কী চা বাগান দেখার সুযোগ হবে না তা কী হয়? খুব সহজে চাইলে বাঁশখালীর এই চা বাগান থেকে ঘুরে আসতে পারেন। পাহাড়ের উঁচুনিচু ঢালুতে সারি সারি চা গাছ। এমন দৃশ্য বাংলাদেশে অন্যতম সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্যের একটি। সুসজ্জিত চা গাছগুলো যেন সবুজের এক অবারিত গালিচা বিছিয়ে রেখেছে।
Advertisement
এটি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। চা বাগানগুলোতে সকালের কুয়াশা, গাছের ফাঁকে ফাঁকে রোদের আলোর খেলা ও চা শ্রমিকদের কাজ করার দৃশ্য এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। বিদেশে রপ্তানি হওয়া ক্লোন চা উৎপাদনে বাগানটি দেশের প্রথম স্থানে আছে। বর্তমানে সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনায় এই চা বাগানটি পরিচালনা হচ্ছে। শীত মৌসুমে এই চা বাগানে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে।
আরও পড়ুন
হিমালয় কন্যা নেপাল ভ্রমণে ঘুরবেন যেসব স্পটে পাখির কলতানে ঘুম ভাঙে যেখানে বাঁশখালী চা বাগানে কিভাবে যাবেন?বাঁশখালী চা বাগান বা বেলগাঁও চা বাগানে যেতে হলে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম শহরে আসতে হবে। চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট বাস স্টেশন বা নতুন ব্রিজ থেকে চাঁদপুর যাওয়ার বাসে জনপ্রতি ৮০ টাকা ভাড়া দিয়ে চাঁদপুর বাজারে নেমে যাবেন। এরপর চাঁদপুর বাজার থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা চা বাগান যেতে হবে এক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ২০০ টাকা। কিংবা নতুন ব্রিজ থেকে রিজার্ভ ট্যাক্সি নিয়ে চা বাগান যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ট্যাক্সি ভাড়া পড়বে ৪০০-৫০০ টাকা।
বাঁশখালী সমুদ্রসৈকতবাঁশখালী সমুদ্রসৈকত চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায় অবস্থিত একটি সমুদ্রসৈকত। এটি বাহারছড়া সমুদ্রসৈকত নামেও পরিচিত। ঝাউবনে ঘেরা বাঁশখালী সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের পর এটিই বাংলাদেশের ২য় দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। বাঁশখালী সমুদ্রসৈকত নির্জনতা প্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা।
Advertisement
যেখানে ঢেউয়ের প্রতিটি স্পর্শে প্রকৃতি যেন নতুন করে প্রাণ পায়। এখানে সমুদ্রের ঢেউগুলো তীরে আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়ে আনে ঝিনুক, শামুক, আর নানা রঙের ছোট ছোট পাথর এখানে হাঁটতে হাঁটতে ঢেউয়ের সঙ্গে আসা ঝিনুক কুড়ানো আর সমুদ্রের গান শোনার অনুভূতি সত্যিই অনন্য।
সৈকতের আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে সূর্যাস্ত। এই সমুদ্রসৈকত থেকে দারুণভাবে সূর্যাস্তের সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব। আর শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে অবস্থান হওয়ায় এই সৈকতে পর্যটকের ভিড় সাধারণত কিছুটা কম দেখা যায়। যারা কক্সবাজার যেতে পারছেন না সময় স্বল্পতার জন্য তারা চাইলে খুব সহজে ছুটির দিন শহর থেকে একটু দূরে বাঁশখালী সমুদ্রসৈকত থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
যেভাবে সমুদ্রেসৈকতে যাবেনবাঁশখালী সমুদ্রসৈকতে যেতে চাইলে ঢাকা বা বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসুন। চট্টগ্রাম শহরের নতুন ব্রিজ/বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে আপনি রিজার্ভ ট্যাক্সি বা বাসে গুনাগুরি বাজার আসবেন। বাসের ক্ষেত্রে আপনাকে গুনতে হবে জনপ্রতি ১০০ টাকা ও ট্যাক্সি রিজার্ভ নিলে৩০০-৪০০ টাকা। সেখান থেকে আবার রিজার্ভ ট্যাক্সি করে বাঁশখালী সমুদ্রসৈকতে যেতে হবে। এক্ষেত্রে খরচ পড়বে ২৫০-৩০০ টাকা।
লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ; পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম
জেএমএস/এমএস