আমাদের দেশে অনেক অঞ্চলে কেউ মারা গেলে তার জন্য সবাই মিলে সত্তর হাজার বা এক লক্ষ বার কালিমায়ে তাইয়্যেবা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ পড়া হয় এই বিশ্বাস থেকে যে এ আমলের বরকতে মৃত ব্যক্তির কবরের আজাব মাফ হয়ে যাবে। অনেকে জীবিত অবস্থায়ও এভাবে কালিমার খতম করে থাকে।
Advertisement
এ রকম কোনো আমল নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বা তার সাহাবিদের থেকে পাওয়া যায় না। এ আমলের ফলে মৃত ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে বা তার কবরের আজাব মাফ হয়ে যাবে এ রকম বিশ্বাসেরও কোনো ভিত্তি নেই।
এটা ঠিক যে, কালিমা তায়্যেবার ফজিলত, মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত বিভিন্ন হাদিসে কালিমায়ে তায়্যিবার বিভিন্ন ফজিলত ও সওয়াবের কথা এসেছে। কালেমায়ে তাওহিদ যে পাঠ করে, কালেমায়ে তাওহিদের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে যার মৃত্যু হয়, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে, আল্লাহর কাছে তার প্রতিদান হলো জান্নাত। মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
مَا مِنْ نَفْسٍ تَمُوتُ تَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَرْجِعُ ذَلِكَ إِلَى قَلْبٍ مُوقِنٍ إِلاَّ غَفَرَ اللَّهُ لَهَا
Advertisement
যে কোন ব্যক্তি এ সাক্ষ্য দিয়ে মারা গেলো, ‘আল্লাহ ব কোন ইলাহ নাই এবং আমি আল্লাহর রাসুল’, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। (সুনানে ইবনে মাজা)
ইতবান ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
فإن الله حرَّم على النار مَنْ قال لا إله إلا الله يَبْتَغِي بذلك وجهَ الله
আল্লাহ তা’আলা এমন ব্যক্তির উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেছে। (সহিহ বুখারি)
Advertisement
তাই জীবিত অবস্থায় যেমন বেশি বেশি কালেমা পাঠ করা উচিত, মৃত ব্যক্তির আত্মায় সওয়াব পৌঁছানোর জন্যও কালেমা পাঠ করা যেতে পারে।
কিন্তু কোনো গ্রহণযোগ্য দলিল ছাড়া আমলের নির্দিষ্ট কোনো ধরন বানানো ও এর বিশেষ ফজিলত বর্ণনা করা বা বিশ্বাস করা ঠিক নয়। মৃত ব্যক্তিকে কবর দেওয়ার পর তার জন্য বেশি বেশি দোয়া করা উচিত, দান-সদকা, কোরআন তেলাওয়াত, কালেমা তায়্যিবার জিকির বা অন্যান্য আমল করে তার জন্য সওয়াব পাঠানো উচিত যেভাবে ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে।
ওএফএফ/জিকেএস