গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে জয়পুরহাটে কেজিতে আলুর দাম কমলো ১০ টাকা। ফলন ভালো হলেও বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে নেমে এসেছে হতাশা। অনেকেই ঋণ নিয়ে আবার কেউ গরু বিক্রি করে আলু চাষ করেছিলেন। এমন দামের কারণে কেউ কেউ আলু তোলাও বন্ধ রেখেছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম কমে গেছে আলুর।
Advertisement
কৃষকরা বলছেন, আলু চাষে গত কয়েক বছর ধরে ভালো লাভের মুখ দেখলেও এ বছরের পরিস্থিতি ভিন্ন। আগাম আলুতে বাজার সয়লাব হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন এ জেলার কৃষকরা। আলুর ভরা মৌসুম শুরু হওয়ার অন্তত ২০-২৫ দিন আগেই তারা মাঠ থেকে আলু তুলছেন।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার জলাটুল গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান বলেন, আমি দুই বিঘা জমি নিয়ে আলু চাষ করেছি। সেই আলু চাষাবাদ করতে, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ আর শ্রমসহ সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ তো দূরের কথা, বিঘা প্রতি লোকসান হয়েছে ১২ হাজার টাকা করে।
হেলকুন্ডা গ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, গত বছর এই সময়ে কেজিপ্রতি আলু ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ টাকা কেজি দামে। উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে।
Advertisement
কালাই উপজেলার কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, ৮ বিঘা জমিতে এবার কার্ডিনাল আলু লাগিয়েছি। ১১০ টাকা কেজি দরে বীজ আলু কিনেছি। সারসহ অন্যান্য খরচও বেশি। এখন আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ১০ টাকায়, অথচ খরচ পড়েছে কেজিপ্রতি ২২ টাকা। তাই লোকসানের ভয়ে আলু তোলা বন্ধ করেছি।
নতুনহাটের আলুর পাইকারি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ১০-১২ টাকা কেজি দরে আলু কিনে মাত্র ১-২ টাকা লাভে বিক্রি করছি। আলুর সরবরাহ অনেক বেশি হওয়ায় দাম পড়ে গেছে।
নতুনহাটে আলু কিনতে আসা ক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ আগে ২৫-৩০ টাকায় যে আলু কিনেছি, এখন বাজারে সেই আলু ১৫-১৮ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সময়ের ব্যবধানে আলুর দাম বাড়তে পারে।
Advertisement
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জয়পুরহাট জেলায় এবার ৪৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। কৃষকরা সরকারের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার দাবি জানিয়েছেন।
আল মামুন/জেডএইচ/জেআইএম