ড্রাগন চাষে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে ‘ড্রিপ ইরিগেশন পদ্ধতি’। কম খরচে মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে জয়পুরহাটের কৃষকের আস্থা অর্জন করছে এ পদ্ধতি। শুধু ড্রাগন চাষেই নয়, ফুলের বাগান ও ফল জাতীয় বাগানে এই ড্রিপ ইরিগেশন পদ্ধতি ব্যবহারে সুফল পাচ্ছেন জেলার কৃষকেরা। এ পদ্ধতি দেখে অন্য কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আগ্রহীরা বলছেন, ‘সরকারিভাবে যদি আমাদেরও ওই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়, আমরা করবো।’
Advertisement
কথা হয় জয়পুরহাট সদর উপজেলার পালি চকমোহন গ্রামের কৃষক গোলাম আজম আলীর সাথে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘৩ বছর আগে আড়াই বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করি। তখন সেচ দিতাম শ্যালো মেশিন ভাড়া করে। ঘণ্টায় ২০০-২৫০ টাকা দিতে হতো। সে সময় পুরো জমি ডুবিয়ে দিতে হতো। এতে প্রচুর খরচ হতো। গত বছর স্থানীয় একটি এনজিওর পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রিপ ইরিগেশন পদ্ধতি বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে খরচ অনেক কম হচ্ছে। যতটুকু পানি প্রয়োজন; ততটুকুই পানি পাচ্ছে। আমি আশা করছি, এ বছর লাভ আরও বৃদ্ধি পাবে।’
শুধু গোলাম আজমই নন, এ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন জেলার অনেকেই। কথা হয় সদর উপজেলার খনজনপুরের কৃষক মোহাম্মদ হেলালের সাথে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ৪ বিঘা জমিতে লিচু আর লটকন গাছ আছে। আমি এবারই প্রথম এ পদ্ধতি শুরু করেছি। এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে সেচ দেওয়ার সময় শ্রমিক লাগে না। জমির সব জায়গায় পানি দিতে হয় না। তাই খরচ অনেকটা কম হচ্ছে। আশা করছি এ পদ্ধতি ব্যবহারে আমরা লাভবান হবো।’
আরও পড়ুন
Advertisement
এ পদ্ধতি ব্যবহারে আগ্রহী কৃষক দিলিপ চন্দ্র জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগে আমরা জমিতে ঢালাও ভাবে সেচ দিতাম। তখন তো পানি বেশি লাগতো। এখন আজম ভাইয়ের এখানে এসে দেখছি এ পদ্ধতি ব্যবহারে পানি নষ্ট হচ্ছে না। আমাদেরও এ ধরনের পদ্ধতি দেওয়া হলে ব্যবহার করতাম।’
বেসকারি উন্নয়ন সংস্থা জেআরডিএম’র কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব জাগো নিউজকে বলেন, ‘কৃষকদের চাষের জন্য অনেক বেশি পানি সেচ দিতে হতো। এতে সেচ খরচ অনেক বৃদ্ধি পেতো। কৃষকেরা লাভবানও কম হতেন। কৃষকদের সেচ-চাষে খরচ যেন কম হয়, তারা যেন লাভবান হোন, সে লক্ষ্যে জিআরডিএম কৃষকদের মাঝে এ পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘অন্য ভাবে চাষ করলে সেচে অনেক বেশি পানি অপচয় হয়। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ড্রিপ ইরিগেশন সেচ পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। এতে কম খরচে ফসলে-বাগানে সেচ দিতে পারবেন চাষিরা। তাতে খরচ কম হবে এবং বেশি লাভবান হবেন তারা। এ পদ্ধতি আরও বাড়ানোর জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।’
আল মামুন/এসইউ/এমএস
Advertisement