আন্তর্জাতিক

গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণায় ফিলিস্তিনিদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার খবরে হাজারও ফিলিস্তিনি রাস্তায় নেমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে মধ্যস্থতাকারী কাতার বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এই চুক্তির ঘোষণা দেয়।

Advertisement

যদিও ইসরায়েল জানিয়েছে, এখনো কিছু বিষয় চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে গাজায় এরই মধ্যে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। লোকজন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ প্রকাশ করছেন। ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে স্মরণীয় মুহূর্তগুলো।

আরও পড়ুন>>

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত, রোববার থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহত ৩০ কী আছে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে?

গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা রন্দা সামিহ বলেন, এই দুঃস্বপ্নের শেষ হওয়ার কথা শুনে এখনো অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। আমরা সব কিছু হারিয়েছি—মানুষ, ঘরবাড়ি, জীবন।

Advertisement

তিনি জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে প্রথমেই তিনি তার পরিবারকে দেইর আল-বালাহর কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন। সামিহ’র কথায়, তাদের ঠিকভাবে কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি। এবার আমরা সঠিক কবর তৈরি করবো এবং তাদের নাম ফলকে লিখবো।

এদিন দেইর আল-বালাহর আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের সামনে ভিড় করে শত শত মানুষ স্লোগান দেন এবং ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে উদ্‌যাপন করেন। হাসপাতালের দিকে যাওয়া একটি অ্যাম্বুলেন্সের পথ ছাড়তে গিয়ে মানুষের মুখে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি ওঠে। এসময় এক সাংবাদিককে ভিড়ের ওপর কাঁধে তুলে তার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

একই সময় গাজার অন্যান্য এলাকাগুলোতেও শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। খান ইউনিসে দেখা যায়, একদল যুবক কাঁধে চড়ে ঢাক বাজিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।

২৭ বছর বয়সী আবদুল করিম জানান, সব হারানোর পরেও আজ আমি খুশি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে আমি আমার স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে দেখতে পাবো।

Advertisement

যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি এবং ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময় করা হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞে কমপক্ষে ৪৬ হাজার ৭০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জন আহত হয়েছেন, নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে। একই সময়ে হামাসের নেতৃত্বে চালানো হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করা হয়।

সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/