খেলাধুলা

‘দেশের জন্যও এভাবে স্বর্ণ জিততে চাই’

আন্তঃসার্ভিস জাতীয় ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় প্রথম অংশ নিয়েই চমক দেখিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাজী লিপি আক্তার। ১৮ বছর বয়সী গাজীপুরের টঙ্গীর এই নারী ভারোত্তোলক ৮৭ কেজি ওজন শ্রেণীতে স্বর্ণ জিতেছেন তিনটি নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে। গত মার্চে হওয়া জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপেও তিনটি নতুন রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জিতেছিলেন লিপি। পরপর দুটি সাফল্য আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে তার।

Advertisement

এবার লিপির নজর আন্তর্জাতিক মঞ্চে। ঘরোয়া প্রতিযোগিতার মতো আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে চান তিনি। ভারোত্তোলক হওয়া, সাফল্য অর্জন করা ও নিজের লক্ষ্য নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিভাবান এই নারী ভরোত্তোলক।

জাগো নিউজ: তিনটি নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জেতার জন্য আপনাকে অভিনন্দন। এ বছর আপনার এটি দ্বিতীয় স্বর্ণপদক। নিজের প্রতিক্রিয়া যদি বলেন-

কাজী লিপি: আপনাকে ধন্যবাদ। প্রতিক্রিয়া তো অবশ্যই আনন্দের। সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়ার পর আমি প্রথমবার আন্তঃসার্ভিসে অংশ নিয়ে সাফল্য পেলাম। এ জন্য আমি অনেক খুশি। এই সাফল্য ধরে রাখতে চাই।

Advertisement

জাগো নিউজ: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কবে যোগ দিয়েছিলেন?

কাজী লিপি: আমি এই প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক থাকা অবস্থায় গত মার্চে বাগেরহাটে হওয়া জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে তিনটি রেকর্ড (ক্র্যাচ, ক্লিন অ্যান্ড জার্ক ও টোটাল) স্বর্ণ জিতেছিলাম। এ বছর চাকরি স্থায়ী হওয়ার পর প্রথম অংশ নিয়েই সাফল্য ধরে রাখতে পেরেছি।

জাগো নিউজ: আপনার পরিবারের সদস্য কয়কজন? অন্য কেউ কি খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত আছেন?

কাজী লিপি: আমরা তিন ভাই ২ বোন। আমি সবার ছোট। আমাদের পরিবারের অন্য কেউ খেলাধুলা করেন না। আমিই একমাত্র এই অঙ্গনে আছি।

Advertisement

জাগো নিউজ: ভারোত্তোলনে আসলেন কীভাবে?

কাজী লিপি: স্কুলে থাকা অবস্থায়ই আমি অল্প অল্প ভারোত্তোলন করতাম। তৃণমূলের কোচ মজিবর স্যার আমার খেলা দেখে পছন্দ করে গত বছর জেলা দলে নিয়ে আসেন। ২০২৩ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম অংশ নিয়ে ৮১ কেজি ওজন শ্রেণিতে পেয়েছিলাম রৌপ্য। মার্চে জিতেছিলাম স্বর্ণ। এবারের স্বর্ণ আমার ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়।

জাগো নিউজ: আপনার বাবা-মা কী করেন?

কাজী লিপি: আমার বাবা নেই। দুই বছর আগে মারা গেছেন। স্ট্রোক করে কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন। তারপর আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এখন আমি, মা ও ছোট ভাই এক সাথে থাকি।

জাগো নিউজ: ভাইরা কী করেন?

কাজী লিপি: বড় ভাই প্রাইভেট কারের ড্রাইভার, অন্য দুইজন ব্যবসা করেন। আমাদের সবার বড় বোন। তার বিয়ে হয়ে গেছে।

জাগো নিউজ: এখন আপনার লক্ষ্য কী?

কাজী লিপি: আমি এখনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেইনি। আমার লক্ষ্য জাতীয় লে সুযোগ পাওয়া এবং স্বর্ণ জেতা। আমি যেভাবে ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছি সেভাবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকেও দেশকে সম্মান এনে দিতে চাই।

জাগো নিউজ: এক-দুই বছরের মধ্যেই আপনি নিজেকে নিয়ে এসেছেন আলোচনায়। এর জন্য কাকে কৃতিত্ব দিতে চান?

কাজী লিপি: আমি প্রথমে কৃতজ্ঞতা জানাই যিনি আমাকে ভারোত্তোলে এনেছেন সেই মজিবর স্যারকে। এখন আমার কোচ শাহরিয়ার সুলতানা সূচি। তার প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। আমার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা।

জাগো নিউজ: ধন্যবাদ

কাজী লিপি: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আরআই/এমএইচ/এএসএম