টানা ছয় কার্যদিবস দরপতনের পর সোমবার (২৫ নভেম্বর) লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত সূচকের পতন দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপ বাড়ানোর কারণে সূচকের এ পতন হয়েছে।
Advertisement
সূচকের পতন হওয়ার পাশাপাশি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। অবশ্য লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার ঘরেই আটকে রয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা সাত কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজারে দাম কমার তালিকায় নামে লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের প্রতি কার্যদিবসেই লেনদেন অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। এতে গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৫৭ পয়েন্ট। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৫১ পয়েন্ট।
Advertisement
এমন টানা দরপতনের পর সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩১ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টা অব্যাহত থাকে। কিন্তু শেষ আধাঘণ্টার লেনদেনে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়ালে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশি কিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৮৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৩৬ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৬ পয়েন্টে নেমে গেছে।
Advertisement
সবকটি মূল্যসূচক কমালেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩০২ কোটি ৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৮৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের ১৩ কোটি ১৮ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিচ হ্যাচারি।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আইসিবি, মিডল্যান্ড ব্যাংক, সোনালী আঁশ, অগ্নি সিস্টেম, ফাইন ফুডস, ফারইস্ট নিটিং এবং ব্র্যাক ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৯টির এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/এমএস