পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে আত্মঘাতী হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য নিহত হয়েছেন। এসময় বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ গেছে ছয় সন্ত্রাসীরও। বুধবার (২০ নভেম্বর) পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
Advertisement
আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৯ নভেম্বর বান্নু জেলার মালি খেল এলাকায় একটি যৌথ চেকপোস্টে সন্ত্রাসীরা হামলার চেষ্টা করে। সেনারা তাদের প্রতিহত করলেও একটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণে চেকপোস্টের সীমানা প্রাচীর এবং আশপাশের অবকাঠামো ধসে পড়ে। এতে ১০ সেনাসদস্য এবং ফ্রন্টিয়ার কনস্ট্যাবুলারির দুই সদস্য নিহত হন।
আইএসপিআর আরও জানায়, প্রতিরোধের মুখে সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরকবোঝাই গাড়ি দিয়ে চেকপোস্টের প্রাচীরে আঘাত করে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে ছয় সন্ত্রাসী নিহত হয়।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
এই হামলার ঘটনায় নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রেসেডন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেছেন, মাতৃভূমির সুরক্ষায় তাদের এই ত্যাগ জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে। তিনি শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং সন্ত্রাস নির্মূলে জাতির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন, দেশের সাহসী সেনারা সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। তিনি আরও বলেন, যারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সন্ত্রাসী হামলার উত্থানসম্প্রতি বেলুচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর ওপর সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবারের ঘটনার মাত্র একদিন আগেই খাইবার পাখতুনখাওয়ার তিরাহ এলাকায় সেনা সদস্যদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষে আট সেনা এবং নয় সন্ত্রাসী নিহত হন। নিষিদ্ধঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
Advertisement
এর আগে, গত মাসে কোয়েটায় এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ২৭ জন নিহত এবং ৬০ জনেরও বেশি আহত হন।
এ অবস্থায় বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাপেক্স কমিটি। অভিযানে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ), বিএলএফ ও ব্রাসের মতো সংগঠনগুলোকে নিশানা করা হবে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, মঙ্গলবারের এই হামলার পর সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা অভিযান শুরু হয়েছে। সামরিক বাহিনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, এই হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা হবে।
সূত্র: ডন, জিও নিউজকেএএ/