দেশের শেয়ারবাজারে দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (২০ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। একই সঙ্গে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে। এর মাধ্যমে ১৬ কার্যদিবসের মধ্যে বাজারটিতে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। তবে বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক।
Advertisement
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতে সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের প্রথম চার কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজারে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৭ পয়েন্ট কমে যায়।
তবে দুপুর সাড়ে ১২টার পর বাজারের পরিস্থিতি বদলে যায়। দাম কমার তালিকা থেকে বেরিয়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। এতে লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
Advertisement
অবশ্য শেষ ২০ মিনিটের লেনদেনে দাম বাড়ার তালিকা থেকে আবার বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা বড় হয়। এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৮৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩৪ পয়েন্টে নেমে গেছে।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ৩০ অক্টোবরের পর ডিএসইতে একক কার্যদিবসে সবচেয়ে কম লেনদেন হলো।
Advertisement
এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৪৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইসলামী ব্যাংকের ১১ কোটি ৭৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আইসিবি।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ফাইন ফুডস, সোনালী আঁশ, অগ্নি সিস্টেম, বেক্সিমকো ফার্মা, বিচ হ্যচারি এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০১টির এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে ছয় কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ১১ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এমএএস/এমকেআর/জিকেএস