ফিচার

৫ হাজার বছর আগেই তৈরি হয়েছিল টয়লেট

টয়লেট বা শৌচাগার ঘরের অন্যতম একটি স্থান। প্রতিটি বাড়িতেই এক বা একাধিক টয়লেট রয়েছে বাড়ির মানুষের সংখ্যা বিবেচনায়। বাড়ি নির্মাণের আগেই শয়নকক্ষ বা খাবার ঘর, রান্নাঘরের মতোই পরিকল্পনা মতো টয়লেট নির্মাণ করা হয়।

Advertisement

তবে আপনি যদি মনে করেন টয়লেট বা শৌচাগার নির্মাণ আধুনিক যুগের ভাবনা, তাহলে খানিকটা ভুল ভাবছেন বটে! আলাদা করে টয়লেট নির্মাণের চল ছিল ৫ হাজার বছর আগেই, এমনই প্রমাণ পাওয়া গেছে প্রত্নতত্ত্ব আবিষ্কারের পর।

শুধু শৌচাগার আবিষ্কারই নয়, আধুনিক যুগে কমোডে ফ্লাশের যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাও কয়েক শতক আগেই আবিষ্কৃত হয়। পৃথিবীর প্রথম শৌচাগারের হদিশ মেলে আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে, প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায়।

তবে ব্রিটিশ সাফাইকর্মী টমাস ক্রেপারকে শৌচাগারের জনক হিসেবে ধরা হয়। তিনিই প্রথম কমোড এবং তা ব্যবহারের জন্য পৃথক জায়গা তৈরি করেন বলে রেকর্ডে লেখা রয়েছে। কিন্তু ক্রেপারের বহু আগেই পৃথিবীতে শৌচাগারের আবিষ্কার হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন৫০০ বছরেও যে বই পাঠোদ্ধার করতে পারেনি কেউ

প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় মাটিতে কুয়ার মতো গর্ত খোঁড়া থাকত। তার উপর গড়ে তোলা হতো ছোট কাঠামো।

ওই কাঠামোর মেঝেয় গর্ত থাকত। ওই গর্ত থেকে মল-মূত্র চিনামাটির পাইপ হয়ে মাটির নিচে পৌঁছাত। কে বা কারা সেই ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিলেন তা জানা যায়নি।

এর প্রায় এক হাজার পর গ্রিকের ক্রিট দ্বীপে গড়ে ওঠা মিনোয়ান সভ্যতায় আরও জটিল পদ্ধতিতে গড়ে ওঠা শৌচাগারের খোঁজ পাওয়া যায়। আধুনিক টয়লেটের মতো সেখানে প্লাম্বিং ব্যবস্থা ছিল। পানির ব্যবহার ছিল শৌচাগারে।

পরে রোমে এই রীতি চালু হয়। প্রাচীন রোমের শৌচাগারে বেঞ্চের মতো বসার জায়গার উপর গর্ত থাকত। সরাসরি নর্দমায় গিয়ে পড়ত মল-মূত্র। সেখানে আলাদা করে পানি ঢালতে হতো না। বরং চিনামাটির চৌবাচ্চা থেকে ধীরগতিতে বইত পানি। সেই পানির সঙ্গেই মল-মূত্র নর্দমায় গিয়ে পড়ত সরাসরি।

Advertisement

কমোড এবং ফ্লাশ-সহ প্রথম আধুনিক শৌচাগার গড়ে ওঠে ১৫৯৬ সালে। রানি প্রথম এলিজাবেথের রাজদরবারের সদস্য স্যর জন হ্যারিংটন এই টয়লেট তৈরি করেন। নিজের বাড়িতে প্রথম গড়ে তোলেন। এরপর রিচমন্ড প্রাসাদেও ওই টয়লেটের নির্মাণ করেন। ওই টয়লেটে একবারে ২৮ লিটার পানি ফ্লাশ হতো। তবে কিছু খামতি ছিল কমোডের গঠনে।

১৭৭৫ সালে স্কটল্যান্ডের আলেকজান্ডার কামিং প্রথম পূর্ণাঙ্গ ফ্লাশ-টয়লেট আবিষ্কার করেন। এরপর ১৮৬০ নাগাদ আবির্ভাব ঘটে ক্রেপারের। ১৮৮১ থেকে ১৮৯৬ সালের মধ্যে প্লাম্বিংয়ের নয়টি পেটেন্ট করান নিজের নামে। সেই থেকে কমোটের আকার-আকৃতি বদলেছে বার বার। উন্নত থেকে উন্নততর হয়েছে শৌচাগার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সোনার তৈরি টয়লেটও আলোচনায় আসে মাঝে মাঝে।

আরও পড়ুনবাস নম্বর ৩৭৫-এর রহস্য আজও অজানানারী হয়ে জন্মালেও এক সময় পুরুষ হয়ে যায় যে প্রাণী

সূত্র: স্মিথোশিয়ান ম্যাগাজিন

কেএসকে/জেআইএম