দেশজুড়ে

১ টাকার পেঁয়াজু খেতে লম্বা লাইনে অপেক্ষা

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ১ টাকা দরে পেঁয়াজু বিক্রি করে আসছেন ভজন কুমার দাস। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়েও তিনি দাম বাড়াননি। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে সুস্বাদু পেঁয়াজু খেতে লোকজন ছুটে আসছেন তার দোকানে।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুখরোচক খাবারের মধ্যে পেঁয়াজু, বেগুনি, সিঙ্গাড়া ও সমুচা অন্যতম। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির কারণে দিন দিন এইসব মুখরোচোক খাবারের দাম বেড়েছে, আকার ছোট হয়েছে। কিন্তু শুনতে অবাক লাগলেও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পৌর সদরের কলেজ রোডের প্রেমতলা এলাকায় গত ২০ বছর ধরে ভজন কুমার দাস প্রতিটি পেঁয়াজু বিক্রি করেন এক টাকায়। ভজনের পেঁয়াজু সুস্বাদু হওয়ায় প্রতিদিন বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিড় জমায় তার দোকানে। ক্রেতা বেশি হওয়ায় অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ লাইন ধরে অপেক্ষা করতে হয় তার সুস্বাদু মচমচে পেঁয়াজুর জন্য। এই ঊর্ধ্বগতির বাজারেও অল্প দামে পেঁয়াজু খেতে পেরে খুশি অনেকেই।

পেঁয়াজু বিক্রেতা ভজন কুমার বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই দোকানে এক টাকা করে পেঁয়াজু বিক্রি করছি। যখন পেঁয়াজের দাম ৩০ টাকা ছিল তখনো এক টাকা করে বিক্রি করেছি। আবার যখন পেঁয়াজের দাম ছিল তিনশ টাকা হয়েছিল তখনো এক টাকা করে পেঁয়াজু বিক্রি করেছি। শুধু তাই নয়, ১৫ বছর আগে ময়দার বস্তা ছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এখন প্রতি বস্তা ময়দার দাম প্রায় ৩৩শ টাকা। তার দোকানের পেঁয়াজুর মধ্যে আশি শতাংশই পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি করা হয়। যার কারণে পেঁয়াজুর স্বাদে ভিন্নতা রয়েছে। তিনি পেঁয়াজু বিক্রি করার ক্ষেত্রে লাভ ক্ষতি হিসাব করেন না।

তিনি বলেন, ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও কাস্টমারকে তৃপ্তি দিতে তিনি এই ব্যবসা করেন। পেঁয়াজুর পাশাপাশি তিনি বেগুনি, সমুচা, সিঙ্গারা, চানাবুট বিক্রি করেন। প্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু হয় তার পেঁয়াজু বিক্রির কার্যক্রম, শেষ হয় প্রায় রাত ৯টার দিকে।

Advertisement

এরমধ্যে চন্দ্রনাথ ধামে বিভিন্ন পর্যটক ও সনাতন ধর্মালম্বী ঘুরতে এলে তার বেচা-বিক্রি বেড়ে যায়। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার বেশি ভিড় থাকে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে তিনি ৩০ বছর ধরে সীতাকুণ্ড ডিগ্রী কলেজের পাশে একটি দোকান করতেন। সেখানে তিনি এক টাকায় চারটি পেঁয়াজু বিক্রি করতেন।

পেঁয়াজু খেতে আসা সীতাকুণ্ড পৌরসদরের ব্যবসায়ী জানে আলম বলেন, ভজনের পেঁয়াজু মানেই অতুলনীয়। স্বাদে, গুণে, মানে, ব্যতিক্রমী হওয়ায় দীর্ঘ লাইন ধরে থাকতে হয় ভজনের পেঁয়াজুর স্বাদ পেতে।

আরেক ব্যবসায়ী মনির উদ্দিন বলেন, দিন দিন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও তিনি (ভজন) কীভাবে ২০ বছর ধরে পেঁয়াজুর দাম এক টাকা রাখেন তা আমার বুঝা আসে না।

Advertisement

এফএ/জেআইএম