মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে রাখাল নৃত্যের মধ্য দিয়ে মনিপুরী সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী মহারাসলীলা উৎসব শুরু হয়েছে।
Advertisement
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার মাধবপুরের শিববাজার উন্মুক্ত মঞ্চে ঢাক-ঢোল, খোল-করতাল আর শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণ ও তার সখি রাধার লীলাকে ঘিরে এ উৎসব শুরু হয়। রাত সাড়ে ১১টায় জোড়া মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় রাসের মূল প্রাণ মহারাসলীলা। এই রাসনৃত্য ভোর পর্যন্ত চলে। এতে গোপীদের সঙ্গে কৃষ্ণের মধুরলীলার কথা গানে ও সুরে ফুটিয়ে তোলেন শিল্পীরা।
এবার মাধবপুর জোড়া মণ্ডপে ১৮২তম রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর কমলগঞ্জের আদমপুরে মনিপুরী মৈতৈ সম্প্রদায়ের আয়োজনে ৪২তম রাসোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাসোৎসবে মনিপুরী সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকসহ হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।
মহারাত্রির আনন্দের পরশ পেতে সমাগত হয় নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মাধবপুর ও আদমপুরের মণ্ডপ প্রাঙ্গণ।
Advertisement
রাস উৎসবকে ঘিরে মাধবপুর ও আদমপুরের মণ্ডপগুলো সাজানো হয়েছে সাদা কাগজের নকশার নিপুণ কারুকাজে। করা হয় আলোকসজ্জাও। এই উৎসব মনিপুরীদের সংস্কৃতির এক বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হয়।
শুক্রবার দুপুরে রাখাল নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাস উৎসব। মহারাসলীলা উপলক্ষে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শিববাজার জোড়া মণ্ডপ মহারাসলীলা দেখতে সারা দেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর মণিপুরী পাড়াগুলো। রং-বেরঙের পোশাক আর বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজে উৎসবের জানান দিচ্ছে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে। রাস উৎসব উপলক্ষে মণিপুরি তাঁতবস্ত্র প্রদর্শনী ও মেলা বসেছে। এছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রাস উৎসবে আয়োজকেরা জানান, মহা-রাসলীলা গোষ্ঠলীলা বা রাখাল নৃত্য দিয়ে দুপুরে শুরু হয়ছে। গোধূলি পর্যন্ত এই রাখাল নৃত্য চলে। গোষ্ঠলীলায় রাখাল সাজে কৃষ্ণের বালক বেলাকে উপস্থাপন করা হয়। রাত ১১টা শুরু হয় মহারাসলীলার নৃত্য বা শ্রী শ্রী কৃষ্ণের মহা-রাসলীলানুসরণ। এই রাসনৃত্য ভোর পর্যন্ত চলে।
মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, রাস উৎসব শুধু মণিপুরিদের জন্য নয়, রাস দেখতে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসেন। এই উৎসবকে ঘিরে মণিপুরি প্রতিটা পরিবার এক মাস থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করে।
Advertisement
ওমর ফারুক নাঈম/এফএ/এএসএম