আজারবাইজানে চলছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৯)। এরই মধ্যে সম্মেলনে অংশ নিতে দেশটির রাজধানী বাকুতে জড়ো হয়েছেন বিশ্বনেতারা। তবে এবারের সম্মেলনে থাকছেন না বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ও সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।
Advertisement
গতকাল সোমবার (১১ নভেম্বর) এই সম্মেলন শুরু হয়। ২২ নভেম্বর পর্যন্ত সম্মেলন চলবে। সম্মেলনের প্রথম দুদিনে বাকুতে ৭৫ জনের বেশি বিশ্বনেতার আসার কথা। তবে জোটের সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাকুর জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না।
জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ জি-২০ জোটের মাত্র কয়েকজন নেতা এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। অবশ্য বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক দূত অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের তিনি এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলায় মার্কিন প্রচেষ্টাকে থামিয়ে দেবে না।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, বড় নেতাদের অনুপস্থিতির পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের প্রভাব বাকুর জলবায়ু সম্মেলনে বেশ ভালোভাবেই পড়েছে।
Advertisement
বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮০ শতাংশই জি-২০ জোটের দখলে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের সঙ্গে জড়িত এই জোটের দেশগুলো। আবার বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী যে গ্রিনহাউজ গ্যাস, তার প্রায় ৮০ শতাংশই এই জোটভুক্ত দেশগুলো থেকে নির্গমিত হয়।
যুক্তরাজ্যের জ্বালানিমন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড গতকাল সোমবার এক্সে বলেন, এই সরকার বিশ্বাস করে যে জলবায়ু নিরাপত্তা হলো জাতীয় নিরাপত্তা।
অন্যদিকে, জলবায়ু বিষয়ে সব দেশের সংহতির আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘের জলবায়ুপ্রধান সাইমন স্টিয়েল। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এই অনিশ্চয়তার মূলে রয়েছে সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়।
Advertisement
ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘প্রতারণা’ অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় দেশগুলো যে জলবায়ু পরিবর্তনের মূলে রয়েছে, তা মানতে নারাজ। এরই মধ্যে তিনি জলবায়ু সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
২০১৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিস শহরে যে কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস (কপ-২১) হয়েছিল, তাতে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জাতিসংঘে একটি আর্ন্তজাতিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। যা প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্ট বা প্যারিস ক্লাইমেট অ্যাকর্ড নামে পরিচিত। জাতিসংঘের ১৯৬টি দেশ এতে সম্মতি দিয়েছিল।
ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসি) গঠিত হবার ২৪ বছর পর এই সম্মতিতে আসতে পেরেছিল জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলো। এই সম্মতির উদ্দেশ্য ছিল, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
সূত্র: এএফপি
এসএএইচ