মো: রাকিব হোসেন
Advertisement
আজ ২৯ অক্টোবর, বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। এ বছর বিশ্ব স্ট্রোক ক্যাম্পেইন ক্রীড়ার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্ট্রোক প্রতিরোধ ও পুনর্বাসনের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ক্রীড়া ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক ও জনসংখ্যাগত সীমা অতিক্রম করে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা সচেতনতার জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে। এই প্রচারাভিযানের লক্ষ্য বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে স্ট্রোক সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কারণ আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করলে স্ট্রোককে হারানো সম্ভব।
স্ট্রোক কী ও কেন হয়?স্ট্রোক হলো একটি নিউরোলজিকাল সমস্যা, যেখানে মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে কোষগুলোর ক্ষতি হয়। সাধারণত দুই ধরনের স্ট্রোক দেখা যায়-
১. ইস্কেমিক স্ট্রোক: যেখানে রক্তনালী বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছায় না, ফলে কোষগুলো মারা যায়।
Advertisement
২. হেমোরেজিক স্ট্রোক: যেখানে রক্তনালী ফেটে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। স্ট্রোকের কারণে অনেক সময় মস্তিষ্কের ভাষা বোঝা ও কথা বলার অংশ আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে প্রায় ৩০-৫০ শতাংশ স্ট্রোক রোগী খাবার গিলতে সমস্যা অনুভব করেন, যা ডিস্ফেজিয়া নামে পরিচিত। খাবার গিলতে না পারলে শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে ফুসফুস সংক্রমণ এবং মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
স্ট্রোক পরবর্তী পুনর্বাসনে স্পিচ অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপি চিকিৎসাস্ট্রোক পরবর্তী স্পিচ অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপি অতীব আবশ্যক চিকিৎসা সেবা। স্পিচ অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপি চিকিৎসক স্ট্রোক রোগীর কথা-ভাষাগত ও খাবার গলাধঃকরণ সমস্যা নির্ণয় এবং চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। স্পিচ অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপি চিকিৎসা শুধু ভাষা ও বাক এবং খাবার গিলার সমস্যা সমাধান করে না, রোগীর যোগাযোগের দক্ষতা পুনরুদ্ধার করতে, আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এবং সমাজে পুনরায় সম্পৃক্ত হতে রোগীর মানসিক এবং সামাজিক পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া এবং এর প্রয়োজনীয়তাস্ট্রোক রোগীদের জন্য স্পিচ অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপি চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হলে, বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইনের মাধ্যমে অতি দ্রুত সরকার স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদ অধিভুক্ত পাঁচ বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব সাইন্স ইন স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি কোর্স সম্পন্নকারী ব্যক্তিদের লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। ২০১৮ সালে এই আইন পাস হলেও এখনো লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া শুরু হয়নি, এই কারণে অনেক রোগী অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন।
চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর পরিবারের ধৈর্য এবং সহায়তা রোগীর উন্নতির জন্যে অপরিহার্য। এই বছর বিশ্ব স্ট্রোক ক্যাম্পেইন ক্রীড়ার মাধ্যমে সচেতনতার বার্তা ছড়াচ্ছে, যেন আমরা সবাই মিলে স্ট্রোকের চেয়ে বড় হতে পারি।
Advertisement
লেখক: শিক্ষার্থী, চতুর্থ বর্ষ, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি, বিএইচপিআই-সিআরপি, চিকিৎসা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
কেএসকে/জিকেএস