আইন-আদালত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

Advertisement

একই সঙ্গে তাকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

চিফ প্রসিকিউটরের করা আবেদন গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের আবেদন করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

Advertisement

এদিন বেলা ১১টা ২০ মিনিটে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আরও পড়ুন

শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের আবেদন শেখ হাসিনা এখন কোথায়? আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কজলিস্টে শুরুর দিনে তিন মামলা

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত গুম-হত্যা এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে চালানো গণহত্যার বিচার করবে এই ট্রাইব্যুন্যাল। গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে।

Advertisement

স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। ওই বছরের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনালের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। তবে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটি ট্রাইব্যুনালকে একীভূত করা হয়। ফলে একটি ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকার্য চলমান ছিল। আগের ৩০টি মামলা এখনো ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। চলে যান প্রতিবেশী দেশ ভারতে। এতদিন সেখানেই থাকলেও সম্প্রতি গুঞ্জন ছড়িয়েছে শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে চলে গেছেন। শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও এ বিষয়ে ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারও কোনো তথ্য নিশ্চিত করেনি।

এফএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম