দেশজুড়ে

ময়মনসিংহে বন্যায় ধান-সবজিতেই ক্ষতি সোয়া ৩০০ কোটি টাকা

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলপুর উপজেলায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় নিজ বাড়িতে ফিরছে মানুষ। তবে পানি নামতেই দৃশ্যমান হচ্ছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। কৃষকের স্বপ্ন এখন দুঃখ হয়ে ভাসছে। আকষ্মিক বন্যায় আমন ধানে ৩১৫ কোটি ৯৮ লাখ ও সবজিতে ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধান ও সবজি মিলিয়ে তিন উপজেলায় মোট ৩২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

Advertisement

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ধোবাউড়ায় ধান ১০ হাজার ৫৬০ হেক্টর, সবজি হেক্টর ১৮ হেক্টর, হালুয়াঘাটে ধান ১০ হাজার ৩১০ হেক্টর, শবজি ৪৫ হেক্টর ও ফুলপুরে ৩ হাজার ৮৯৩ হেক্টর ধান ও ৪৫ হেক্টর জমির সবজির ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ধোবউড়ায় ধানে ১৩৪ কোটি ৭৫ লাখ, সবজিতে ১ কোটি ৮ লাখ, হালুয়াঘাট ধানে ১৩১ কোটি ৫৬ লাখ, সবজিতে ২ কোটি ৭০ লাখ ও ফুলপুরে ধানে ৪৯ কোটি ৬৭ লাখ ও সবজিতে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধান ও সবজি মিলিয়ে তিন উপজেলায় মোট ৩২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, তিন উপজেলায় ১ লাখ ৫৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিরুপণের জন্য স্ব স্ব বিভাগে চিঠি দেওয়া আছে। জরিপের পর বিস্তারিত জানানো হবে।

ধোবাউড়া উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের কৃষক কবির সারোয়ার সুজন বলেন, ৪০ একর ফিশারির মাছ ও ১৫০ একর ফসলের ধান তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ৪০ বছর ধরে মাছচাষ করে আসছি, সেইসঙ্গে ধানও। কখনো ভাবতে পারিনি এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। সরকার সহযোগিতা না করলে ঘুরে দাঁড়ানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

Advertisement

ফুলপুর উপজেলার সিংহেস্বর গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ধানের জমি ও সবজির ক্ষেত সবই নষ্ট হয়ে গেছে। কী খাইয়া বাঁচবো জানি না। সরকার আমাদের দিকে নজর না দিলে আর কোনো উপায় থাকবে না।

ফুলপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কামরুল হাসান কামু বলেন, কৃষকদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কৃষকদের জমায়েত করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া এসব ফসলি জমিতে সরিষা, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল চাষে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে। এসব ফসলের বীজ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. নাসরিন আক্তার বানু বলেন, বন্যায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাদের সহযোগিতার লক্ষ্যে পরামর্শের পাশাপাশি সহযোগিতা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গত ৪ অক্টোবর প্লাবিত হয় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলপুর উপজেলা। এতে দুর্ভোগে পড়েন দুই লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়া রাস্তাঘাট, বাড়ি ঘর, ধান ও সবজির ক্ষেত, সড়ক ও বাঁধে ব্যাপক ক্ষতি হয়।

Advertisement

মঞ্জুরুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম