দেশজুড়ে

হেফাজতে ইসলামের একপক্ষের কমিটি ঘোষণা, অন্যপক্ষের প্রত্যাখ্যান

নারায়ণগঞ্জে জেলা ও মহানগর হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের মধ্যে অন্তঃকোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। একটি অংশ নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে, বিপরীতে অন্য অংশ ওই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। সেইসঙ্গে দুইটি পক্ষ একে অপরের মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

Advertisement

হেফাজতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর শহরের বাগে জান্নাত মসজিদের দ্বিতীয় তলায় প্রতিনিধি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হেফাজতে ইসলামের কমিটি ঘোষণা করা হয়। হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব এই কমিটি ঘোষণা করেন।

কমিটিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন এবিএম সিরাজুল মামুন। সেইসঙ্গে মহানগর হেফাজতে ইসলামের কমিটিতে সভাপতি হিসেবে মুফতি হারুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন মাওলানা মীর আহমাদুল্লাহ।

এ বিষয়ে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, আপাতত আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হেফাজতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেছি। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে মিডিয়ার মাধ্যমে কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নাম ঘোষণা করবেন। আশা করি তাদের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ইসলাম শক্তিশালী সংগঠনে রূপ নেবে।

Advertisement

কিন্তু এই কমিটি ঘোষণার পরপরই হেফাজতে ইসলামের অপর অংশের নেতাকর্মীদের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারা এই কমিটিকে মেনে নেবে না বলে বিভিন্নভাবে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করেন। সেইসঙ্গে অনেকেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

তারই ধারাবাহিকতায় গত ৫ অক্টোবর বিকেলে শহরের উকিলপাড়া মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নারায়ণগঞ্জের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের ব্যানারে হেফাজতের একটি অংশের নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। আর এই মতবিনিময় সভা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন কমিটিকে প্রত্যাখানের ঘোষণা দেওয়া হয়।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল কাদির বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করলাম। নারায়ণগঞ্জবাসী এই কমিটি মানে না, মানতে পারে না। বিতর্কিত লোকদের নিয়ে এই কমিটি হতে পারে না।

একইসঙ্গে জেলার নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া এবিএম সিরাজুল মামুন তার পদবী প্রত্যাখ্যান করে বলেন, নারায়ণগঞ্জের সর্বজনশ্রদ্ধেয় আলেম মাওলানা আব্দুল আউয়াল সাহেবকে জেলা কমিটির মূল দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া এবং জেলা ও মহানগরের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের মতামতকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। তাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হেফাজত কমিটি ঘোষণা করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি।

Advertisement

এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের মিছিলে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এদিন জুমার নামাজের পর শহরের ডিআইটি কেন্দ্রীয় রেলওয়ে জামে মসজিদের সামনে এই ঘটনা ঘটে। প্রায় মিনিট দশেক ধরে হেফাজতের নেতাকর্মীদের মধ্যে হৈ চৈ ও হাতাহাতি চলে।

পরে সিনিয়র নেতারা বার বার অনুরোধ করলে থামে। তবে পণ্ড হয়ে যায় পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল। পরবর্তীতে অপর একটি গ্রুপ মিছিল করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। আর এ সকল বিষয় সমাধান না করেই এবার নতুন করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

মোবাশ্বির শ্রাবণ/এফএ/এমএস