হায়েজ বা মাসিকের সময় এবং নেফাস বা সন্তান জন্মদান পরবর্তী রক্তশ্রাবের সময় নারীদের জন্য কোরআন তিলাওয়াত করা নিষিদ্ধ। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
Advertisement
لاَ تَقْرَإِ الْحَائِضُ وَلاَ الْجُنُبُ شَيْئًا مِنَ الْقُرْآنِ
মাসিক অবস্থায় থাকা নারী এবং যাদের উপর গোসল ফরজ তারা কোরআন তিলওয়াত করবে না। (সুনানে তিরমিজি: ১৩১)
তবে মাসিক ও নেফাসের সময় কোরআন তেলাওয়াত শোনা এবং উচ্চারণ না করে কোরআনের লেখার ওপর নজর বুলিয়ে যাওয়া এবং মনে মনে পড়া নিষিদ্ধ নয়। আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোনো এক স্ত্রী ঋতুমতী থাকা অবস্থায়ও তিনি তার কোলে মাথা রেখে শুতেন এবং কোরআন পাঠ করতেন। (সুনানে নাসাঈ: ৩৮১)
Advertisement
মনে মনে সিজদার আয়াত পড়লে কোনো অবস্থায়ই সিজদা ওয়াজিব হয় না। সিজদার আয়াত শুনলে সাধারণ অবস্থায় সিজদা ওয়াজিব হয়। তবে হায়েজ-নেফাস অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলেও নারীদের ওপর সিজদা ওয়াজিব হবে না। তাই পবিত্র হওয়ার পর সিজদা আদায় করতে হবে না। হাম্মাদ (রহ.) বলেছেন,
سَأَلْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، وَإِبْرَاهِيمَ عَنِ الْحَائِضِ تَسْمَعُ السَّجْدَةَ؟ فَقَالاَ : لَيْسَ عَلَيْهَا سُجُودٌ، الصَّلاَة أَكْبَرُ مِنْ ذَلِكَ.
আমি সাঈদ ইবনে জুবাই ও ইবরাহিম নাখঈকে জিজ্ঞাসা করেছি, কোনো নারী হায়েজ অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে তাকে সিজদা করতে হবে কি না? উত্তরে তারা বললেন, তাকে সিজদা আদায় করতে হবে না। এই সময় নামাজ আদায় করতে হয় না অথচ নামাজ সিজদা থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমল। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৪৩৪৮)
তবে কেউ যদি গোসল ফরজ অবস্থায় সিজদার আয়াত শোনে, তার ওপর সিজদা ওয়াজিব হবে। পবিত্রতা অর্জনের পর তাকে সিজদা আদায় করতে হবে। ইবরাহিম নাখঈ (রহ.) ও সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহ.) বলেছেন,
Advertisement
إذَا سَمِعَ الْجُنُبُ السَّجْدَةَ اغْتَسَلَ، ثُمَّ سَجَدَ.
গোসল ফরজ অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে গোসল করার পর সে উক্ত সিজদা আদায় করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৪৩৪৬)
ইমাম আবু হানিফার (রহ.) মতে কোরআনে এ রকম ১৪টি আয়াত আছে যেগুলো পড়লে বা শুনলে সিজদা দেওয়া ওয়াজিব। আয়াতগুলো হলো (১) সুরা আরাফের ২০৬ নং আয়াত, (২) সুরা রাদের ১৫ নং আয়াত, (৩) সুরা নাহলের ৪৯ নং আয়াত, (৪) সুরা বনি ইসরাইলের ১০৯ নং আয়াত, (৫) সুরা মারিয়ামের ৫৮ নং আয়াত, (৬) সুরা হজের ১৮ নং আয়াত, (৭) সুরা ফোরকানের ৬০ নং আয়াত, (৮) সুরা নামলের ২৬ নং আয়াত, (৯) সুরা সিজদার ১৫ নং আয়াত, (১০) সুরা সোয়াদের ২৫ নং আয়াত, (১১) সুরা হা-মিম সিজদার ৩৮ নং আয়াত, (১২) সুরা নাজমের ৬২ নং আয়াত, (১৩) সুরা ইনশিকাকের ২১ নং আয়াত এবং (১৪) সুরা আলাকের ১৯ নং আয়াত।
ওএফএফ/জিকেএস