ভ্রমণ

রহস্যময় যে স্থানে মানুষের পৌঁছানোও কঠিন

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রহস্যময় অনেক স্থান। তেমনই ভারতে এমন এক রহস্যময় স্থান আছে, যা অনেকেরই অজানা। তেমনই এক স্থান তামিলনাড়ুর পূর্ব উপকূলে রামেশ্বরম দ্বীপের তীরে অবস্থিত।

Advertisement

ভারতের এই শেষ সীমানায় গেলে আপনি স্পষ্টভাবে শ্রীলঙ্কা দেখতে পাবেন। স্থানটির নাম ধানুশকোডি। তামিলনাড়ুর পামবান দ্বীপের (রামেশ্বরম দ্বীপ) দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত।

ধানুশকোডি একটি রহস্যে ঘেরা জায়গা সেখানে পৌঁছানো মানুষের পক্ষে বেশ কঠিন। এই শহরে পৌঁছাতে মূল ভূ-খণ্ড থেকে পামবান দ্বীপ অতিক্রম করতে হয়।

বেশ কয়েকটি মাছ ধরার গ্রাম থেকে ধানুশকোডির যাত্রা শুরু হয়। ধানুশকোডি হলো ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে একমাত্র সীমান্ত, যা পাল্ক প্রণালীতে বালির স্তূপের উপর বিদ্যমান।

Advertisement

১৯৬৪ সালের ডিসেম্বরে ধানুশকোডিতে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় শহরটি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১৮০০ জন নিহত হয় ও ১০০ জন যাত্রী বহনকারী ট্রেন ডুবে যায়। এরপর থেকে সরকারকর্তৃক শহরটিকে মানুষের বসবাসের অনুপযোগী ঘোষণা করে। ফলে স্থানটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

যদিও এখন দ্বীপটিতে প্রায় ৫০০ এরও বেশি জেলে ৫০টি কুঁড়েঘরে বসবাস করেন। জীবিকা নির্বাহের জন্যই তারা ধনুশকোডিতে থাকেন। তবে এখনও স্থানটিকে ভূতের শহর বলা হয়।

দিনের বেলায় সেখানে লোকজন চলাফেরা করলেও রাতে কেউই সেখানে যান না। ধনুশকোডি থেকে রামেশ্বরমের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার।

আরও পড়ুন

Advertisement

নেপাল ভ্রমণে যেসব স্থানে ঢুঁ মারতে ভুলবেন না অ্যাডভেঞ্চারে ঠাসা নাপিত্তাছড়া ট্রেইল

ধনুশকোডি ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে একটি সুন্দর বালুকাময় উপকূল দেখা যায়। যা নাসার ছবিতে বছর দুয়েক আগে ধরা পড়ে। ধানুশকোডিতে এমন একটি রাস্তা আছে, যেটি ধরে শ্রীলঙ্কা থেকে ধনুশকোডির দূরত্ব মাত্র ৩১ কিলোমিটার। রাস্তাটি থেকে স্পষ্টভাবেই দৃশ্যমান শ্রীলঙ্কা।

এমনকি ধানুশকোডি পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট স্থানের মধ্যেও একটি। এটি ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে একমাত্র স্থল সীমানা, যা পাক প্রণালীতে বালির টিলায় বিদ্যমান। স্থানটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৫০ গজ। এ কারণেই এটি বিশ্বের ক্ষুদ্রতম স্থানগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের মর্মান্তিক ঘটনার পর পার হয়েছে ৫৮ বছরেরও বেশি সময়। বর্তমানে শহরটি ধীরে ধীরে জীবিত হয়ে উঠছে। এমনকি ভ্রমণের অফবিট গন্তব্য হিসেবেও অনেকেই বেছে নিচ্ছেন স্থানটি।

সেখানকার নির্মলতা, নীল সমুদ্র, সাদা বালি ও এর বালুকাময় উপকূলরেখার ধ্বংসাবশেষ ভ্রমণকারীদের আকৃষ্ট করে। এছাড়া সমুদ্র সৈকতে একটি বা দুটি ছোট হাট ও ছোট চায়ের স্টলও আছে। চাইলে আপনি ঘুরে আসতে পারেন রহস্যময় এক স্থান ধানুশকোডি থেকে।

জেএমএস/এএসএম