সাহিত্য

নিশির বিয়ের কাণ্ডকারখানা

মো. নাইম হোসেন খান

Advertisement

গ্রামের সামাজিক বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো সত্যিই আনন্দময় হয়, মুখর থাকে উপভোগ্য নানা আয়োজনে।

সাধারণত বর আসবে ঘোড়ার পিঠে চড়ে। তবে যুগ পাল্টেছে। হয়তো তাই নিশির বর এসেছে বাইক নিয়ে। যদিও নিশির বর বাইক চালাতে একটু অদক্ষ। তাতে কি? শখের তোলা আশি টাকা। বাড়িতে ঢোকার আগেই ঢালু জায়গা। সেখানেই শেরওয়ানিওয়ালা বাইক নিয়ে ধপাস। সবাই মিলে ধরে উঠিয়ে নিয়ে এলাম, তেমন কিছু হয়নি। এ যাত্রায় বেঁচে গেছে বেচারা। বর বিয়ের গেট পর্যন্ত আসতেই আটকে দেওয়া হলো, মোটা অঙ্কের বিনিময়ে তাদের ঢুকতে দেওয়া হলো।

জামাইকে বসতে দেওয়া হবে নশার খাটে। এখানেও দেখা গেল আরেক কাণ্ড। বরের খাটে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন কয়েকজন, এখানেও তাদের খুশি করতে হবে। এখানেই ঘটল মজার ঘটনা। বরের ছোট ভাই জিয়াউল এগিয়ে এলো, হাতের জাদুতে তাদের উঠিয়ে দিতে। আহা কাণ্ড! হাত বোলানো মাত্রই ঘুম থেকে উঠে এক এক করে চিৎকার দিয়ে সবাই পালালো।

Advertisement

পরে এর রহস্য জানা গেল। তাদের ঘুম ভাঙানোর জন্য সেফটিপিনের সুচালো অংশ ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রতিশোধ হিসেবে কৌশলে জিয়াউলকে খাইয়ে দেওয়া হলো তেতো স্বাদের শরবত। এটাই হয়তো বিয়ে বাড়িতে বেয়াই-বেয়াইনদের খুনসুঁটি।

সবাই ভরপেট খাওয়া-দাওয়ার পরে বরকে ঘরের ভেতর নেওয়া হলো। একি! বর ঘরের ভেতর ঢুকেই চক্ষু চড়কগাছ। পাশাপাশি বসা লাল ঘোমটা টানা চারজন। বিয়ে করলো একজনকে। বউ চারজন হলো কীভাবে? ধাঁধা বুঝতে পারলো যে, এই ৪ জনের মধ্য থেকে খুঁজে বের করতে হবে নিশিকে।

বরের এই চরম বিপদে এগিয়ে এলো তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী নিশি। ঘোমটার আড়াল থেকে মেহেদি রাঙা হাত বের করতেই বর বুঝে গেল, এটাই তার নিশি। সবাই অবাক হয়ে দেখলো এই অল্প সময়ে একে অপরকে কত আপন করে নিয়েছে।

এসইউ/এমএস

Advertisement