জাগো জবস

২ হাজার টাকার মূলধনে লাখোপতি কথা

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

Advertisement

করোনার সময় চারদিকে মাস্কের প্রচুর চাহিদা। তিনি ভাবলেন সুন্দর সব মাস্ক তৈরি করলে কেমন হয়? গতানুগতিক নয়। একটু ফ্যাশনেবল। ভিন্ন ডিজাইনের। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। কিছু মাস্ক তৈরি করে নানা রকম কার্টুন আঁকালেন। বাজারে ছাড়তেই রীতিমতো হইচই পড়ে গেল। এক মাসেই কয়েক হাজার পিস মাস্ক বিক্রি হলো। এভাবেই একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন উম্মে সুমাইয়া হাসান কথা। পড়াশোনা করছেন নওগাঁ সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে।

তার ব্যবসার শুরু ২০২০ সালের ৩০ আগস্ট। শুরুতে মাত্র ২০০০ টাকা মূলধন ছিল। এখন তা প্রায় ১ লাখ টাকায় পৌঁছেছে। সব খরচ বাদে মাসে আয় প্রায় ১৫ হাজার টাকার মতো। অনলাইনে পণ্য বিক্রি করেন। ফেসবুকে তার পেজের নাম ‘কুন্দনন্দিনী’। শুরুতে মাস্ক থাকলেও এখন পণ্য বেড়েছে। তিনি ভারত, চীন প্রভৃতি দেশ থেকে শাড়ি, জুয়েলারি, জুতা, ব্যাগ, কসমেটিক পণ্য আমদানি করেন। পাশাপশি নিজের হাতে তৈরি পাঞ্জাবি, শার্ট ও শাড়ি ইত্যাদি বিক্রি করেন।

নিজের ব্যবসা সম্পর্কে উম্মে সুমাইয়া হাসান কথা বলেন, ‘আমি সব সময় মানসম্মত এবং ব্যতিক্রম পণ্য ক্রেতাদের দিতে চেষ্টা করি। আমার কাছে ৫০ থেকে ৫ হাজার টাকা দামের পণ্য আছে। ক্রেতা যখন পণ্য পেয়ে খুশি হন; তখন খুব ভালো লাগে। পরিবারের সবাই আমাকে সাহায্য করেন। পণ্য তৈরির কাঁচামাল স্থানীয় বাজার থেকেই সংগ্রহ করি।’

Advertisement

আরও পড়ুন: শেখ রিয়াজের বিসিএস জয়ের গল্প 

নারী উদ্যোক্তা হয়ে কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন? জানতে চাইলে কথা বলেন, ‘নারী যে উদ্যোক্তা হতে পারেন। ভালো ব্যবসা করতে পারেন। কিছু মানুষ একদমই তা মানতে চান না। তারা ভাবেন, নারীদের দিয়ে কিছু হবে না। নানা ভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাই নারী উদ্যোক্তাদের বেশি দরকার মানসিক সাপোর্ট। কারণ সব কাজে মানসিক প্রস্তুতিই প্রধান।’

উদ্যোক্তা হয়ে কী হবে? এ ব্যবসার ভবিষ্যৎ কী? তার চেয়ে বরং অন্য কিছু করো। এমন নানা কথা শুনেছেন তিনি। এসব কথাকে তিনি পাত্তা দেননি। তার মতো এগিয়ে গেছেন। তাই অল্প দিনে ক্রেতাদের মন জয় করতে পেরেছেন। কুরিয়ারে পণ্য পাঠালে নষ্ট হতে পারে। এ বিষয়ে ক্রেতার জন্য বাড়তি সুবিধা রেখেছেন। নষ্ট হলে আবার নতুন পণ্য পাঠিয়ে দেন বা মূল্য ফেরত দেন। ১৬ থেকে ৩৫ বছরের নারীরা তার পণ্যের প্রধান ক্রেতা।

নতুন নারী উদ্যোক্তাদের জন্য তার পরামর্শ হচ্ছে, অনেক সমস্যা আসবে; সব সমস্যা উপেক্ষা করে এগোতে হবে। সমস্যাকে ভয় পেলে চলবে না। নিজেকে নতুন কিছু করতে হবে। অন্যেরটা অনুকরণ করে নয়। এখন মফস্বলের মানুষ মফস্বলে বসেই পছন্দসই পণ্য কিনতে পারেন। তাদের যেন শহরে ছুটতে না হয়, সে জন্য কাজ করার পরিকল্পনা আছে কথার।

Advertisement

লেখক: অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, সেলস অপারেশনস, ফেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড।

এসইউ/জিকেএস