কৃষি ও প্রকৃতি

ক্যাপসিকাম এখন ভোলার কৃষকদের গলার কাঁটা

গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার ভোলায় ক্যাপসিকামের ব্যাপক ফলন হয়েছে। কিন্তু পাইকারি বাজারে এর ভালো দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। এতে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। ফলে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম এখন ভোলার কৃষকদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।

Advertisement

সরেজমিনে জানা যায়, ভোলার ৭ উপজেলায় গত বছর ৭০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল ক্যাপসিকাম। এ বছর চাষ হয়েছে ৭৫ হেক্টর জমিতে। তবে এবারও সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চর ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নে ক্যাপসিকামের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়েছে।

এদিকে মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর ক্যাপসিকামের ব্যাপক ফলন হয়েছে। ফলে হাসি ফুটেছিল কৃষকদের মুখে। কিন্তু ক্ষেতের ক্যাপসিকাম বিক্রি করতে গিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন পাইকারি আড়তে ভালো দাম পাচ্ছেন না তারা।

আরও পড়ুন: ক্যাপসিকাম চাষে রিপনের মাসে আয় ৫০ হাজার

Advertisement

সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চর এলাকার কৃষক মো. সিরাজ ও মো. মাহাফুজ জানান, তারা পৃথকভাবে ৮০ শতাংশ জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন। বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরিসহ সব মিলে প্রায় ৪ লাখ টাকার মতো খরচ করেছেন। ক্ষেতে ব্যাপক ফলন হয়েছে।

তারা আরও জানান, গত বছর ক্যাপসিকাম রোপণের পর ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বীজতলা নষ্ট হয়েছিল। এতে তাদের খুব একটা লাভ হয়নি। কিন্তু এবার ঘূর্ণিঝড়ের পরে তারা বীজ রোপণ করেছে। তাই ঘূর্ণিঝড়ে তাদের ক্যাপসিকামের ক্ষতি হয়নি।

দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের কৃষক মো. মনছুর ও মো. রাসেল জানান, গত বছর সিজনের প্রথমেই তারা ১৬০-১৮০ টাকা দরে ক্যাপসিকাম পাইকারি বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এবার সিজনের শুরুতে মাত্র ৫০ টাকা আর সর্বোচ্চ ৮০ টাকা করে দাম পাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: ঈশ্বরদীতে ঢ্যাঁড়শের দ্বিগুণ দামে খুশি চাষিরা

Advertisement

তারা আরও জানান, এবার ক্যাপসিকামের বীজ, সার, কীটনাশক, বিভিন্ন উপকরণ ও শ্রমিকের মজুরি সব কিছুরই খরচ বেশি। কিন্তু তারা বাজারদর কম পাচ্ছেন। এতে তাদের লাভ তো দূরের কথা, চালান উঠবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত।

একই গ্রামের পাখি বেগম জানান, এবার ক্যাপসিকামের ব্যাপক ফলন হলেও দাম পাচ্ছেন না বাজারে। এজন্য ক্যাপসিকাম তাদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।

কৃষক মো. রাকিব জানান, তারা প্রতি বছরই মদনপুর চরে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম চাষ করে লাখ লাখ টাকা লাভ করেন। কিন্তু এবছর ক্যাপসিকামের বাজারদর কম হওয়ায় লাভ করা নিয়ে খুবই চিন্তিত।

আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে বরবটির দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি

ভোলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মোস্তফা সোহেল বলেন, ‘বর্তমানে কৃষকরা ক্যাপসিকামের বাজারদর একটু কম হওয়ায় চিন্তিত। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা কৃষকদের ক্যাপসিকামের ভালো দাম পাওয়া নিয়ে কাজ করছি। দেশের বড় বড় পাইকারি বাজারে ক্যাপসিকাম বিক্রির বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবো।’

জুয়েল সাহা বিকাশ/এসইউ/জেআইএম