সাহিত্য

আমিনুল ইসলামের তিনটি কবিতা

ব্যর্থতার প্রেসনোট

Advertisement

দ্যাখো—গায়ে ভালোবাসার ইউনিফর্ম আর হিরোইনসেবীদের মতো জড়িয়ে সে—বহুগামী অন্ধকারের শরীরে,—যেখানে জোছনাকে কুকুরের চোখ বলে মনে হয়!তথাপি চেষ্টা করেছি। একবার। বহুবার।কখনো একাদশীর চাঁদ কখনো পূর্ণিমা।পারলাম না। মনটা খারাপ। আকাশের গায়।

মাই লর্ড, ইওর অনার, ব্যর্থতা কি শুধুই আমার!পায়ের কাছে বঙ্গোপসাগরের অফুরন্ত রিজার্ভকিন্তু আকাশ কি পারে শ্রাবণের ঝারি দিয়ে—মুক্ত করতে শীতলক্ষ্যাকে দূষণের গ্রাস থেকে?

সাফল্য দ্রৌপদীর সন্তানপ্রতিটি ব্যর্থতার পেছনে থাকে বহুমুখি বন্ধ্যা সহবাস।

Advertisement

****

আমার অস্তিত্বের ভেতর

কে সে আমার ভেতরে যে আমি খেতে বসলে টেনে ধরে ক্ষুধা- না খেও নাকো আর? আমি দৌড়োতে গেলে আমার পথ স্পীড ব্রেকার হয়ে চেয়ে ওঠে চার রঙা চোখে, না পথিক,তোমার জন্য বরাদ্দকৃত দৌড় ফুরিয়েছে আরও আগেই। আমি ঘুমুতে গেলে সে তাঁর খামখেয়ালী হাত রাখে— চোখের পাতায়—কখনো ঘুম আসে—কখনো আসে নাকখনো-বা মাঝপথেই ভেঙে যায়, উঠে বসি শয্যা ছেড়ে।আমি প্রার্থনায় বসি অথচ মনোযোগ ব্যাহত হয় বারবারপরমাত্মার সাথে অদৃশ্যের তারে হয় না পদ্মাসেতু রচনা-আমার উপাসনা খরার আউশের মতো ঝরে পড়ে বিফলতায়-আমি আমার পরম প্রিয় অভ্যাসের অনুগত যা আমাকে মিলিত হতে প্ররোচনা দেয়; অথচ সেখানেও বাধা, কখনো মাঝপথে, কখনো-বা শুরুতেই- শেষ হয়ে যায় সবকিছু তীরবিদ্ধ ঘোড়ার মতো হাঁফাতে থাকি আমি ঘর্মাক্ত শরীরে-মাঝে মাঝে রাগ ওঠে- মনে হয় নিজেকেই খুন করে ফেলি-কিন্তু প্রাণের প্রতি প্রণয় আমার অপরিসীম, পারি না-, ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে ভঙ্গুর গণতন্ত্রের মতো দাঁড়িয়ে থাকি আপন অস্তিত্বে পরবর্তী ব্যর্থতা হজম করার আশঙ্কা নিয়ে মনে।

আমাকে গভীরভাবে যারা জানেন, তাদের কারও কারও মন খারাপ হয়; কেউবা অভ্যস্ত হয়ে উদাসীন থাকেন সংশিত নীরবতায়।এ নিয়ে আজও কেউ আমার কাছে প্রকাশ্যে ব্যাখ্যা চান নাই-ভাবি- যদি জীবন নিজেই কোনোদিন ব্যাখ্যা দাবি করে বসে-তুমি যদি আমাকে এভাবে যাপন করবে তবে কেন ধরেছিলে অস্তিত্বে,আমি কি জবাব দেবো জীবনকে? কি জবাব দেবো!!!

Advertisement

****

মাঝিকে

নৌকা তো সেই পুরোনো দিনেরবুকের তলায় স্রোতের দাগহাইল ও গুড়া রয়েছে অটুটতুমিও ভোলোনি যোগের ভাগ।

পারানের কড়ি পাচ্ছো যে মাঝি এই নিয়ে খুশি অন্তহীনঢেউ ছাড়া কোনো ঝুঁকি আছে কি নাউদাসীন তুমি রাত্রিদিন।

কানায় কানায় ভরেছে কখনজল ছুঁই ছুঁই গলুই ধারঝড়ের চেয়েও বড় ভয় আজবাদাম অদূরদর্শিতার।

ও রে ও মাঝি কেন যে ভোলোনৌকাডুবির রয়েছে রিস্কনূহের নাও-ও লাগতো না কূলেযাত্রী ওঠালে সংখ্যাধিক।

এসইউ/এমএস