চলতি আমন মৌসুমে ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা। তারা ধান চাষে দিন দিন অনীহা প্রকাশ করছেন। বর্তমানে কম দামে ধান বিক্রয় করে বিভিন্ন ফসল চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা ।ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জ, ভাউলার হাট, নেকমরদ, লাহিড়ী বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমন ধান (সুমন সর্না, ব্রি ধান ৫১, ৫২, বিনা ৭ ) ইত্যাদি জাত প্রতি বস্তা (৭৫) কেজি ১১০০-১১২০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। চাউল বিক্রয় হচ্ছে প্রতি কেজি ২৩-২৪ টাকা দরে।কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২৯ হাজার ৭ শত ১৩ হেক্টর। অর্জিত হয় ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫২৮ হেক্টর। চাউলের লক্ষ্যমাত্রা প্রতি হেক্টরে ২.৭৫ মেট্রিক টন হারে উৎপাদন ধরা হলেও উৎপন্ন হচ্ছে ২.৯৬ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৪ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রায় উৎপন্ন হচ্ছে ৩ লাখ ৯১ হাজার ১০৫ মেট্রিক টন। ধান ও চালের দাম কম বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় বাজারে ভারতীয় এলসি চাল সয়লাব হয়েছে। ভারতীয় এলসি চালের দাম কম হওয়ার কারণে নিজ জেলার উৎপাদিত চালের চাহিদা কমে যাচ্ছে। এলসি চাল আসার কারণে অন্য জেলা হতে ব্যবসায়ীরা ঠাকুরগাঁওয়ে চাল ক্রয় করতে আসছে না। এছাড়াও সরকার খুব সীমিত চাল সংগ্রহ করছে।তারা আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে মাত্র ১২ হাজার ৭৪৪ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করবে খাদ্য অধিদফতর। মিলাররা প্রতি হাস্কিং মিলের জন্য বরাদ্ধ পেয়েছেন মাত্র ১৩৫ বস্তা (৫০) কেজি। আমরা (ব্যবসায়ীরা) কম দামে ধান ক্রয় করছি সত্যি কিন্তু উৎপাদিত চাল খুবই কম দামে বিক্রয় করতে হচ্ছে। অনেক সময় বাইরের ব্যবসায়ীদের অভাবে চাল বিক্রয় করতে পারছি না।ব্যবসায়ীদের লোকসানের কারণে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় ৩ হাজার হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে এর সঙ্গে জড়িত প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ছে। তবে বর্তমানে সরকার চাল আমদানিতে ২০% শুল্ক আরোপ করায় আমদানি কিছুটা কমছে। ব্যবসায়ী, চাষিসহ সকলের দাবি সরকার চাল আমদানিতে শুল্ক আরও বৃদ্ধি করে দেশি চালের বাজার ঠিক রাখবেন।এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময় মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ে এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রথমদিকে বাজারে ভাল দাম পেলেও বর্তমান বাজার কম হওয়ায় কৃষক লোকসান গুনছেন।রবিউল এহসান রিপন/এসএস/এমএস
Advertisement