ধর্ম

‘শিক্ষার্থীদের শাস্তি’ সম্পর্কে যা বললেন আল্লামা তকি ওসমানি

কোমলমতি ছোট্ট শিশু শিক্ষার্থীদের মাত্রাতিরক্তি শাস্তি দেয়ার খবর প্রায়ই শোনা যায়। এটি মারাত্মক অন্যায়। শিক্ষার্থীদের প্রতি জুলুমের শামিল। শিক্ষার্থীদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক বিচারপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা তাকি উসমানি। এর আগেও তিনি শিশু নির্যাতন সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ নসিহত করেছেন।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার উদ্দেশ্যে আসা শিক্ষার্থীরা যে বিভাগের হোক না কেন, তারা সবাই ইলমে দ্বীনের মেহমান। দ্বীন শিখতে আসা এসব শিক্ষার্থীদের যথাযথ সম্মান ও ইজ্জত করতে হবে। তাদের প্রতি যথাযথ ইজ্জত ও সম্মান না দেখালে অন্যরা কিভাবে তাদের প্রতি সম্মান ও ইজ্জত দেখাবে?

সুতরাং শিক্ষার্থীদের প্রতি স্নেহসুলভ ও মায়ার আচরণ দেখাতে হবে। তাদের ইজ্জত, সম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। আর তাতে তাদের মধ্যেও পরস্পরের প্রতি ইজ্জত, সম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধের বিষয়টি তৈরি হবে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থী ছোট কিংবা বড় হোক, তাদের সঙ্গে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না; যাতে তাদের অসম্মান হয়। এ কথা এজন্য বলছি যে- অনেক সময় ওস্তাদরা সীমাতিরিক্ত শাস্তি দিয়ে ফেলেন; যা কিছুতেই উচিত নয়।

Advertisement

শুধু তা-ই নয়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বা আচরণের ক্ষেত্রেও উত্তম ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওস্তাদরা এভাবে কথা বলেন-

- আরে ব্যাটা তুই এটা কী করিস?

- আরে ব্যাটা এমন করিস ক্যান?

- আরে ব্যাটা এখানে বস।

Advertisement

যদিও অনেকে এ কথাগুলো নিজের মনের অজান্তে বলে ফেলেন, তথাপিও শিক্ষার্থীদের ওপর এ কথাগুলোর বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা প্রভাব পড়ে।

অথচ ওস্তাদ বা শিক্ষকের কাজ হলো- শিক্ষার্থীদের উত্তম ভাষা ও নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়া। ভালো আমল-আখলাকে অভ্যস্ত করে তোলা। পরস্পরের প্রতি কথাবার্তায় সম্বোধনের উত্তম পদ্ধতি শেখানো।

শিক্ষার্থীদের এভাবে কথা বলার প্রশিক্ষণ দেওয়া যে-

‘যদি তুমি শত্রুর সঙ্গেও কথা বল; তখনও তোমাকে আদবের সঙ্গে, নম্রতার সঙ্গে, সম্মান জানিয়ে কথা বলতে হবে। আবার কারো ব্যাপারে  সমালোচনা (তানকিদ) করলেও তা ভদ্রতার সঙ্গে করতে হবে। শিক্ষা জীবনের প্রথমদিন থেকেই ছাত্রদেরকে আমাদের এই সবক শেখাতে হবে।

আল্লামা তকি ওসমানি ওস্তাদ বা শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে আরও বলেছেন-

‘আল্লাহ চাহে তো এমন (অশোভনমূলক) কাজ  করবেন না। তাদেরকে ইজ্জত করুন, ইজ্জত করা শেখান। তারা (কোমলমতি শিক্ষার্থীরা) রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেহমান। তাদের সঙ্গে সম্মান ও মুহাব্বতের আচরণ করুন।’

তবে হ্যাঁ এটা ঠিক যে- প্রশিক্ষণ ও বাস্তবায়নের জন্য কখনো ধমক দিতে হয়, শাস্তি দিতে হয়। আর তা দেওয়াও যাবে। তবে তা হতে হবে পরিশীলিত ও মার্জিত পন্থায়। শিশুর প্রতি উত্তম আচরণে এটাই আমার সর্বশেষ নিবেদন, অনুগ্রহপূর্বক এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখবেন!

এমএমএস/জেআইএম