ফিচার

মায়ের চোখের আলোয় স্বপ্ন দেখেন সাইফুল

মা! ছোট্ট একটি শব্দ! কিন্তু এর বিশালতা নিয়ে কোনো বর্ণনা যেন চলে না। পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ও মায়াময়ী শব্দও এটি। মা ডাক শুনলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে মায়াবী সুন্দর এক মুখ। যে মুখে লেগে থাকে স্নেহ, মমতা আর ভালোবাসা। যে স্নেহ, মমতা আর ভালোবাসায় বেড়ে উঠে মানুষ জয় করে বিশ্ব।

Advertisement

প্রতিবেদনটি যাকে নিয়ে তার নাম সাইফুল ইসলাম। যার জীবনটা কঠিন সংগ্রামের। জন্মের মাত্র দুই বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তবে দমে যাননি সাইফুল। তাকে দমিয়ে যেতে দেননি মা। সেই প্রতিবন্ধকতা নিয়েই বেড়ে উঠেছেন সাইফুল। মায়ের স্নেহ-যত্ন আর বাবার ভালোবাসায় সাইফুল এগিয়ে চলেছেন সামনে।

১৯৯৯ সালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কড়ৈতলী গ্রামের মিয়াজি বাড়িতে জন্ম নেন সাইফুল ইসলাম। অজানা এক রোগে দৃষ্টি হারালে মায়ের চোখে পৃথিবী দেখতে থাকেন তিনি। এখন সেই মায়ের চোখেই বিশ্বজয় করার স্বপ্ন দেখেন তিনি।

অবশ্য শিক্ষা অর্জনের শুরুতে সাইফুলের পথে ছিল নানা প্রতিবন্ধকতা। ব্রেইল পদ্ধতিতে প্রথম তার শিক্ষাজীবন শুরু হলেও পরে অন্যজনের কাছ থেকে শুনে শুনে সে পড়া মুখস্ত করেই চলতে থাকে তার শিক্ষাজীবন।

Advertisement

তার লেখাপড়ায় হাতেখড়ি হয় দালালবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর দালালবাজার এন কে উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি এবং মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে এইসএসসি পাস করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলেও সুযোগ পান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) লেখাপড়া করার। ২০১৭ সালে জাবির ইতিহাস বিভাগে স্নাতকে ভর্তি হন সাইফুল।

শুনে শুনে বিদ্যার্জনে তিনি ব্যবহার করেন প্রযুক্তি। মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে চলে তার শিক্ষা। রেকর্ডিং সিস্টেমের ব্যবহার হয় সেখানে।

তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মেজ সাইফুল। পারিবারিক অবস্থা যে অত ভালো নয় তা তাদের জীর্ণ ঘরবাড়ি দেখেই বোঝা যায়।

Advertisement

একদিকে চোখের আলোর প্রতিবন্ধকতা, অন্যদিকে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা। এতো বাধার পরও স্বপ্ন দেখেন সাইফুল। একদিন বড় হয়ে চাকরি করে মায়ের কষ্ট দূর করবেন। সে প্রার্থনাই যেন দিনরাত স্রষ্টার কাছে করেন তিনি।

এইচএ/এমকেএইচ