কৃষি ও প্রকৃতি

বিদেশে যাচ্ছে পটুয়াখালীর মিষ্টি পান

পটুয়াখালীতে বাড়ছে পান চাষ। বেশি মুনাফা হওয়ায় পান চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। জেলার মিষ্টি পানের গুণগত মান ভালো হওয়ায় জেলার পান দেশের গণ্ডি পেরিয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশে। ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

Advertisement

জানা যায়, জেলা সদর, বাউফল, দশমিনা, রাঙ্গাবালী, দুমকী এলাকায় সারি সারি পানের বরজ। লাভ বেশি হওয়ায় স্থানীয় চাষিরা পান চাষে আগ্রহী হচ্ছে। চাষিরা বরজ থেকে পান সংগ্রহ করে রাস্তায়, বাড়ির সামনে বসে পানের গাদি সাজাচ্ছেন। এরপর টমটম যোগে পৌঁছে যায় স্থানীয় বাজার ও ঢাকাগামী ডাবল ডেকার লঞ্চে। ট্রাকযোগেও ঢাকা, যশোর পৌঁছে যায় পান।

চাষিরা জানান, সব ক্ষেত্রে সরকার ঋণ দিলেও তারা ঋণ পান না। তাই কম সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন তারা। কারণ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলে পান চাষ আরও বাড়তো। এছাড়া কৃষি বিভাগ থেকেও সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সদর উপজেলার চাষি রবীন্দ্র পানুয়া জানান, ভাদ্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত পানের বরজ নির্মাণ করা যায়। এখানে তিন শতাংশে এক কাঠা। প্রতি কাঠায় বিশ কান্দি পান গাছ লাগানো যায়। বৈশাখে পান বিক্রি শুরু হয়। পৌষ মাস পর্যন্ত পান সংগ্রহ চলবে।

Advertisement

দশমিনার পান চাষি রণজিৎ পানুয়া জানান, একটি সুস্থ গাছ থেকে ১০০-১৫০টি পর্যন্ত পান পাওয়া যায়। প্রকারভেদে প্রতি চল্লি পান ৫০-৬০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হয়। দুই চল্লিতে এক বিরা, ছয় চল্লিতে এক মুডি, ২৪ চল্লিতে এক পাই, এর ১৬ পাইতে এক গাদি। পাইকারি বাজারে প্রতি পাই ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকায় বিক্রি হয়।

বাউফলের পান চাষি সুব্রত পানুয়া জানান, বর্তমানে পানের দাম বাড়ছে। বাজার দর ভালো থাকলে ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবে। লাভ ভালো হয়। তাই দিনদিন পান চাষে মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ী কালু জানান, পটুয়াখালীর মিষ্টি পান দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যায়। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে এ পান রফতানি করা হয়। বিশেষ করে সৌদি আরব, দুবাই, ইতালি, আমেরিকায় এ জেলার পান যায়। সেসব দেশে বসবাসরত বাঙালিরা এ পান বেশি পছন্দ করে। দামও ভালো পাওয়া যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত জানান, একসময় জেলায় পানের আবাদ অনেক কম ছিল। বর্তমানে বাজার মূল্য ভালো থাকায় এবং কৃষক লাভবান হওয়ায় পান চাষ বাড়ছে।

Advertisement

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এসইউ/এমএস