আইন-আদালত

জাহালম কাণ্ড : সোনালী ব্যাংকের ৮ জনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা

বিনা দোষে দুদকের মামলায় পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ভুল আসামি করায় ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের ১১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পর এবার ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে সোনালী ব্যাংক। এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের করা এক প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। ওই প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে হাইকোর্টে হলফনামা আকারে জমা দিচ্ছে সোনালী ব্যাংক। জাহালমের বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শনিবার সাংবাদিকদের জানান, গত ২২ আগস্ট সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে হলফনামা আকারে একটি প্রতিবেদন পেয়েছি। যেখানে ওনাদের তদন্তে ৮ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা আছে। তাই তারা ‘এ ঘটনায় দায় এড়াতে পারে না’ মর্মে আদালতের কাছে এমন বক্তব্য তুলে ধরবো। আগামী বুধবার এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে।

Advertisement

গত ২১ আগস্ট পাটকল শ্রমিক জাহালমকে আসামি করে ঋণ জালিয়াতির মামলার ১১ তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে বলে হাইকোর্টকে জানান দুদক। এরপর আদালত কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে কি কারণে ওইসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে তা ২৮ আগস্ট জানাতে নির্দেশ দেন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া রুলও জারি করেন আদালত। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চেয়েছেন। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করেন।

Advertisement

পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফ আই আর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট গত ১৭ এপ্রিল জাহালমকাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদন চেয়েছিলেন।

জাহালম নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না, আমি নির্দোষ।’ আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লোকটির বয়স ৩০-৩২ বছরের বেশি নয়। পরনে লুঙ্গি আর শার্ট। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এ বিচারকের উদ্দেশে তাকে বারবার বলতে দেখা যায়, ‘আমি আবু সালেক না।’

জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন এই জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।

এফএইচ/জেএইচ/এমএস

Advertisement