দেশজুড়ে

পাওনা টাকা না দেয়ায় মালিকের হাতে অটোরিকশা চালক খুন

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় পাওনা টাকা না দেয়ায় অটোরিকশা চালককে খুন করেছে মালিক। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

Advertisement

নিহতের নাম জামিল হোসেন (৩৬)। তিনি নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরি থানার আছাদপুর (নোয়াপাড়া) গ্রামের মৃত মফিজ আলীর ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার হাবিবনগর গ্রামের আবদুস সামাদের কলোনীতে বসবাস করতেন জামিল।

এ ঘটনায় অটোরিকশার মালিক শাকিল ওরফে সেকেল মিয়াকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের পাইলগাঁও গ্রামের এখলাছ মিয়ার ছেলে।

পুলিশ জানায়, জগন্নাথপুর পৌর এলাকার হাবিবনগর গ্রামের ছিলিমপুর স্ট্রেট মার্কেটের গ্যারেজের মালিক সেকেল মিয়া। তিনি ২০টি অটোরিকশার মালিক। তার কাছ থেকে দিনপ্রতি ৩০০ টাকা দেয়ার চুক্তিতে একটি অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতেন জামিল।

Advertisement

কিছুদিন আগে জামিলের এক বন্ধু শাকিলের কাছ থেকে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। জামিল শাকিলকে রাজি করে তার বন্ধুকে একটি অটোরিকশার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু কয়েকদিন পর জামিলের সেই বন্ধু অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে অটোরিকশার টাকা দেয়ার সব দায় পড়ে জামিলের ওপর।

সালিশ বিচারের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়, নিজের অটোরিকশা ভাড়ার পাশাপাশি আরও ২৫০ টাকাসহ প্রতিদিন মোট ৫৫০ টাকা শাকিলকে দিতে হবে। এভাবে অটোরিকশার ১৮ হাজার টাকা শোধ করতে হবে জামিলকে। তিনি রাজি হয়ে সেই টাকা পরিশোধ করতে থাকেন। প্রতিদিন অতিরিক্ত ২৫০ টাকা করে দিয়ে প্রায় ১২ হাজার টাকা পরিশোধ করেছিলেন জামিল।

কিন্তু গত ১২ আগস্ট ঈদের দিন জামিলের পরিবার গ্রামে বাড়ি চলে যায়। ১৩ আগস্ট শাকিলের কাছে কয়েকদিনের ছুটি চাইলে তিনি তা দিতে অসম্মতি জানান। এ সময় স্থানীয় পৌর কাউন্সিলরের সহায়তায় জামিলকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন শাকিল। ১৩ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট বিকেল পর্যন্ত তাকে শিকল দিয়ে বেধে নির্যাতন করায় এক সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে জগন্নাথপুর উপজেলা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জামিলকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা তার শরীরে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন।

এ ব্যাপারে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, একটি নৃশংস ঘটনা। সামান্য কয়টা টাকার জন্য এভাবে শিকল দিয়ে বেধে নির্যাতন করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা আসামিকে গ্রেফতার করেছি। থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে এর সঙ্গে কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তার খোঁজ নেয়া হবে।

Advertisement

মোসাইদ রাহাত/এমএসএইচ