রাজনীতি

বায়তুল মোকাররমে এরশাদের জানাজায় জনস্রোত

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় জানাজায় সর্বস্তরের জনতার ঢল নেমেছে। সোমবার বাদ আসর তার জানাজা পড়ান বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব।

Advertisement

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মসিউর রহমান রাঙ্গা, রুহুল আমিন হাওলাদার, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ প্রমুখ।

জানাজার আগে দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এরশাদের জীবনী তুলে ধরেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য তার বিপুল অবদান। ইসলামের জন্য তিনি অনেক কাজ করেছেন। মানুষ হিসেবে কথা ও কাজে ভুলত্রুটি থাকতে পারে। আমি এরশাদের ভাই হিসেবে ক্ষমা চাই। দোয়া চাই। তাকে সবাই ক্ষমা করে দেবেন। তাকে যেন আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।

এর আগে বিকেল ৫টায় সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহ ফ্রিজার ভ্যানে বায়তুল মোকাররম মসজিদে আনা হয়।

Advertisement

এদিকে জানাজায় অংশ নিতে আসরের নামাজের এক ঘণ্টা আগে থেকে এরশাদের অসংখ্য ভক্ত, নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তি মসজিদে ভিড় করেন। জাতীয় মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

এর আগে দুপুর ১২টায় এরশাদের মরদেহ কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে নেতাকর্মীসহ সর্বসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরশাদের মরদেহ দেখতে সকাল থেকেই অসংখ্য ভক্ত, নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় রোববার বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে।

রোববার (১৪ জুলাই) সকাল পৌনে ৮টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এরশাদ।

Advertisement

৯০ বছর বয়সী এরশাদ রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২২ জুন সিএমএইচে ভর্তি করা হয় তাকে। এর আগেও তিনি একাধিকবার দেশ-বিদেশে চিকিৎসা নেন।

রংপুর-৩ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত এ সংসদ সদস্য ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলায় (রংপুর জেলার দিনহাটা) জন্মগ্রহণ করেন। এরশাদ বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান, এককালীন প্রধান সামরিক প্রশাসক ও রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা।

১৯৮১ সালের ৩০ মে, জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর এরশাদের রাজনৈতিক অভিলাষ প্রকাশ পায়। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদ রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর নাগাদ তিনি প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে দেশ শাসন শুরু করেন। ওইদিন তিনি দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এএফএম আহসানুদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে নিজের অধিকারে নেন।

এরশাদ দেশে উপজেলা পদ্ধতি চালু করেন এবং ১৯৮৫ সালে প্রথম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এ দলের মনোনয়ন নিয়ে ১৯৮৬ সালে পাঁচ বছরের জন্য দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রংপুর থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

জেইউ/এসআই/জেএইচ/এমকেএইচ