তিন দশক পর প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে জাপান সরকার। আন্তর্জাতিক তিমি কমিশন (আইডব্লিউসি) থেকে বিতর্কিতভাবে নিজেদের প্রত্যাহার করার পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে টোকিও। সরকারের কাছ থেকে নির্দেশনা আসার পর তিমি ধরা শুরুও করে দিয়েছে দেশটির জেলেরা।
Advertisement
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সোমবার সকালে জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল কুশিরোতে তিমি শিকার শুরু করেছে পাঁচটি জাহাজ। ঠিক একই সময়ে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শিমোনোশেকি থেকেও তিনটি জাহাজ তিমি শিকারের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে।
দেশটির ফিশারিজ সংস্থার দেয়া হিসাব মতে, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে ওই জাহাজগুলো যৌথভাবে মোট ২২৭টি তিমিকে হত্যা করেছে। জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলনের শেষে গত শনিবার এই তথ্য জানানো হয়ে। শিকার করা ২২৭টির মধ্যে ৫২টি ‘মিঙ্কি’, ১৫০টি ‘ব্রাইডি’ এবং ২৫টি ‘সেই’ প্রজাতির তিমি।
দেশটির এই তিমি শিকার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর তিমি শিকার বিরোধী দেশ এবং পরিবেশবিদরা ব্যপক সমালোচনা করছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকারের নির্দেশ আসার পর দেশটির তিমি শিকারকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উল্লাস করছে।
Advertisement
রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা এবং তিমি শিকারিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জাপানের তিমি শিকারিদের একটি সংগঠনের প্রধান ইয়োশিফুমি তার উল্লাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমার মন এখন সুখের সাগরে ভাসছে। এমনটা হচ্ছে জেনে আমি খুব খুশি।’
ডলফিন শিকারি হিসেবে পরিচিত দেশটির ফিশারিজ বিভাগের কর্মকর্তা কাই। তার ডলফিন শিকার নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা তৈরি হয়েছিল, তিনি বলেন, ‘এটা একটা খুব ছোট ব্যবসা কিন্তু তিমি শিকার করতে পেরে আমি গর্বিত। আমার শহরের মানুষ গত ৪০০ বছর ধরে তিমি শিকার করে আসছে।’
বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকারে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আন্তর্জাতিক তিমি কমিশনের ১৯৮৬ সাল প্রণীত একটি ধারা স্থগিত রাখার ব্যাপারে জাপানকে আন্তর্জাকিভাবে দোষারোপ করা হয়। কেননা ওই ধারা লঙ্ঘন করে তারা গবেষণার কথা বলে বানিজ্যিকভাবে তিমি শিকার করে আসছিল।
গত বছরের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক তিমি কমিশন থেক নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেয় জাপান। কিন্তু যারা বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকারের বিরোধী তারা টোকিওর এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেও ব্যর্থ হয়। তারপরই মূলত দেশটি বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকার শুরু করল।
Advertisement
এসএ/জেআইএম