খেলাধুলা

কে হবেন এবার কার্ডিফের সেই আশরাফুল?

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপরীতে পুঁচকে এক বাংলাদেশ। কারো সুদূর কল্পনাতেও বাংলাদেশ জিততে পারে, এমন কিছু ছিল না। গ্লেন ম্যাকগ্রা-জেসন গিলেস্পিদের আগুন ঝরানো বোলিংয়ের সামনে তখন কেঁপে ওঠেন বিশ্বের যেকোনো প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানও। অন্যদিকে গিলক্রিস-হেইডেন-পন্টিংরা ব্যাটিংয়ে নামলে যবুথবু অবস্থা হয় প্রতিপক্ষের বোলারদের।

Advertisement

এমন এক দলের বিপক্ষে খেলতে নামবে মাত্র পাঁচ বছর আগে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া বাংলাদেশ! টাইগারদের সবচেয়ে বড় সমর্থকেরও তাই আশা, অসিদের বিপক্ষে সম্মানজনক পরাজয়।

কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ওভার বল করতে আসেন মাশরাফি। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই উইকেট তুলে নিয়ে দিনটা যে বাংলাদেশের সে বার্তা প্রথমেই দিয়ে দেন তিনি।

মাশরাফির বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন অসি ওপেনার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। এরপর ৯ রানের মাথায় তাপস বৈশ্যর বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান অসি অধিনায়ক রিকি পন্টিংও।

Advertisement

শুরুর এমন বোলিং দাপট বাংলাদেশি বোলাররা ধরে রাখেন পুরো ইনিংস জুড়েই। তবে ডেমিয়েন মার্টিন এবং মাইকেল ক্লার্কের ফিফটির উপর ভর করে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ২৫০ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। গ্লেন ম্যাকগ্রা-জেসন গিলেস্পিদের গতি সামলে বাংলাদেশের জন্য এই লক্ষ্য তাড়া করা ছিলো প্রায় অসম্ভব।

তবে টাইগারদের জন্য ওই ম্যাচে ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন একজন। ছোটখাটো গড়নের, হালকা-পাতলা, শ্যামবর্ণের এক ক্রিকেটার। যার বয়স তখন ছিল মাত্র বিশ।

ম্যাকগ্রা-ব্র্যাড হগদের বোলিংকে তুলোধুনা করে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে নেন মাত্র ১০১ বলে। যেখানে ছিলো ১১টি দৃষ্টিনন্দন চারের মার। আশরাফুলকে যোগ্য সঙ্গ দেন অধিনায়ক হাবিবুল বাশারও। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৭ রান।

Advertisement

এ দুইজন আউট হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান আফতাব আহমেদ। ১৩ বল থেকে তার ২১ রানের ঝড়ো ইনিংস ইতিহাস গড়া নিশ্চিত করে বাংলাদেশের।

সেদিন অন্য রকম এক আশরাফুলের উপর ভর করে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো হারিয়ে দেয় প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়াকে। যা এখনও পর্যন্ত অসিদের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র জয়। আশরাফুলের সেই বিধ্বংসী আর দাপুটে ইনিংস এখনও চোখে লেগে আছে অনেকের। আশরাফুলের প্রশংসায় তখন পঞ্চমুখ ছিলেন ক্রিকেট বিশ্বের সব বিশেষজ্ঞই।

ওই জয়ের ১৪ বছর পর বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপের ইংল্যান্ডেরই অন্য এক ম্যাচে মাঠে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এবার আর নবীন আর আনকোরা কোনো বাংলাদেশ দল নয়। এক শক্তিশালী ও বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশ। টাইগারদের সেমির স্বপ্ন পূরণে এবার সবচেয়ে বড় বাঁধা এই অস্ট্রেলিয়াই।

যাদের বিপক্ষে জয়টা খুব বেশি জরুরি বাংলাদেশের; কিন্তু কে এনে দেবেন সেই জয়? কে হবেন এবার কার্ডিফের সেই আশরাফুল? ব্যাট হাতে অসাধারণ ফর্মে থাকা সাকিব, নাকি তামিম? কিংবা তরুণ সৌম্য, লিটন দাসদের কেউ? নাকি অন্য কেউ হয়ে উঠবেন একজন আশরাফুল? এসব প্রশ্নের জবাব পেতে অপেক্ষা করতে হবে বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত।

লেখক : মাহমুদুল হাসান বাপ্পি।

আইএইচএস/এমআরএম